শুভেচ্ছা সবাইকে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির প্রাণকেন্দ্র ম্যানহাটান। শত শত মানুষের কোলাহলে দেখে নিশ্চয়ই টের পেয়ে গেছেন কতোটা প্রাণবন্ত এ শহর। এখানে দিন-রাতের কোন তফাৎ নেই বললেই চলে। সে কারণেই এ শহরকে বলা হয়ে থাকে ‘দ্য সিটি নেভার স্লিপস’! এই তকমা পাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করলে চোখের সামনেই ভেসে উঠবে ম্যানহাটনের এই আইকনিক প্লেস যার নাম- দ্য টাইমস স্কয়ার! বলা হয়ে থাকে, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যস্ততম জায়গার একটি।
ব্যস্ত না হয়েই উপায় কী, বলুন? এই জায়গাটি এমন একটি অবস্থানে যেখানে ব্রডওয়ে, সেভেনথ অ্যাভিনিউ এবং ফোর্টি টু সড়ক এসে মিলিত হয়েছে।
এই কারণে টাইমস স্কয়ারকে ‘দ্য ক্রস রোড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘দ্য হার্ট অব দ্য গ্রেট হোয়াইট ওয়ে’ নামেও পরিচিত। এই জায়গার গুরুত্ব ভৌগলিক পরিসীমায় আটকে রাখা অসম্ভব। টাইমস স্কয়ারকে আবার অনেকে নিউ ইয়র্ক সিটির হৃদস্পন্দন বলেও ডাকে। যেখানে শতশত বিলবোর্ডের বর্ণিল ডিসপ্লে আর হাজারো বাতির উজ্জল রঙিন আলোয় সম্মিলন ঘটে মানুষের আশা-আকাঙ্খা আর স্বপ্নের।
গ্রীষ্ম, বর্ষা বা শীত – সব ঋতুতেই জমজমাট এই টাইমস স্কয়ার। আর দিন কিংবা রাত, সব সময়ই চলে মানুষের ছুটে চলা, আড্ডা আর বিনোদন। সে কারণেই দিনের চেয়ে মনে হয় রাতই বেশি জমজমাট থাকে সারা পৃথিবী ট্যুরিস্টদের পদচারণায়।
বাইরে থেকে কেউ ঘুরতে আসলে নিউইয়র্কবাসীরা একবারের জন্য হলেও তাদের টাইমস স্কয়ার দেখাতে নিয়ে আসেন। যা রীতিমতো অদৃশ্য নিয়মে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া নিয়মিত পর্যটকদের আনাগোনা তো আছেই।
প্রতি বছর ৫ কোটি পর্যটকের পদচারণার মুখরিত টাইমস স্কয়ার সংস্কৃতি আর বিনোদনের আরেক নাম। প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ টাইমস স্কয়ার দিয়ে যাতায়াত করেন। ছুটির দিনগুলোতে এই সংখ্যা সাড়ে চার লাখও ছাড়িয়ে যায়।
এর নামকরণের পেছনেও আছে ছোট্ট একটি গল্প। আগে এই জায়গাটির নাম ছিলো লং-একর। ১৯০৪ সালে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের সদর দফতর নতুন-নির্মিত এই টাইমস ভবনে স্থানান্তরের পর এর নামকরণ করা হয় টাইমস স্কোয়ার। নিউ ইয়ারের কাউন্ট ডাউন, বল ড্রপের ঐতিহ্য এই জায়গা থেকেই শুরু হয়েছিলো ১৯০৭ সালে। যা এখনো বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের কাছে বহুল প্রত্যাশিত একটি ইভেন্ট।
আলো ঝলমলে ব্যস্ততম এই বাণিজ্যিক কেন্দ্র একাধারে পর্যটক হটস্পটও বটে। ডিজিটাল বিলবোর্ডের টোয়েন্টি ফোর-সেভেন চকচকে প্রদর্শনী সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে বাধ্য। রাতের বেলা এই বিলবোর্ডগুলোর কারণেই আরো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে টাইমস স্কয়ার।
নতুন কেউ এখানে ঘুরতে এলে প্রথমে যে প্রশ্নটি মাথায় আসে তা হলো, নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে এতো বিলবোর্ড কেন? এ চিরন্তন প্রশ্নের আসলে নির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই। মজার ব্যপার হলো, এখানে পর্যটক উপস্থিতি বেশি থাকায় বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন দেয়াকে লাভজনক মনে করে মার্কেটিং কোম্পানিগুলো। আবার বড় বড় স্ক্রীনে আর বিলবোর্ডে চলা বিজ্ঞাপনগুলোই হয়ে ওঠে ট্যুরিস্ট আকর্ষণের অন্যতম মাধ্যম।
টাইমস স্কয়ারের এই বিলবোর্ডগুলো বিজ্ঞাপন হিসেবে কতখানি ইফেক্টিভ, তার কিছু উদাহরণ দেই।
কিছুদিন আগে রায়হান রাফি পরিচালিত সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’ আমাদের দেশে ব্লকবাস্টার হিট করেছিল। সুড়ঙ্গ’ সিনেমার মার্কেটিং টিম নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারের একটি বিলবোর্ডে সিনেমাটির বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাঙ্গালীদের মধ্যে প্রচারের জন্য এই উদ্যোগ না হয় মানা গেলো, কিন্তু নিউইয়র্ক থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে বাংলাদেশে কি এর প্রভাব ছিলো? উত্তরটা- অবশ্যই ছিলো- কারণ, নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারের বিলবোর্ডে সুড়ঙ্গের বিজ্ঞাপন দেয়ার পরদিনই দেশের প্রধান পত্রিকাগুলো থেকে শুরু করে অনলাইন পোর্টাল – সবখানে ছিলো এই খবর।
টাইমস স্কয়ারের স্পটিফাই বিলবোর্ডে মুজাকে ফিচার করা হয়েছিল। ফলাফল ছিলো একই। পরদিন দেশের মিডিয়ায়, অনলাইন থেকে পত্রিকা, সবখানে এই খবর।
চিরকুট ড্রামার পাভেল অরিনের নতুন প্রজেক্ট ‘দ্য লিভিং রুম সেশন’ এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও টাইমস স্কয়ারের বিলবোর্ডের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে, যেখানে আরো আটজন বাংলাদেশি আর্টিস্টকে ফিচার করা হয়েছে।
আমাদের ঢাকার কথায় আসি এবার, দিনে দিনে এই শহরও হয়ে উঠছে নিউ ইয়র্ক সিটির মতো প্রাণবন্ত নগরী। গুলশান-বনানী এলাকায় ঢুকলে তো কথাই নেই। ডানে-বামে, এমনকি মাথার ওপর তাকালেও দেখা মিলে কাঁচে ঘেরা উচুঁ উঁচু সব অত্যাধুনিক ভবন। মোড়ে মোড়ে এলইডি বিলবোর্ডে টোয়েন্টি ফোর-সেভেন চলে বিজ্ঞাপন। কমে আসছে রাত-দিনের পার্থক্য। মাঝরাতেও সরগরম থাকে রেস্টুরেন্টগুলো। নামিদামী ব্র্যান্ডের গাড়িরও দেখা মিলে প্রচুর। বিদেশীরা তো ঘুরতে এসে পার্থক্য খুঁজে পান না, বাংলাদেশে, নাকি পশ্চিমা কোন দেশে।
কে জানে, আগামীতে ঢাকার গুলশান ২-এর গোলচত্বরও হয়ে উঠতে পারে নিউ ইয়র্কের এই প্রাণকেন্দ্র টাইমস স্কয়ারের মতো জমজমাট প্লেস। আপনি যদি সেটি মনে করেন আমাদেরকে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
ধন্যবাদ সবাইকে।
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
New York – the city that never sleeps
Greetings to all.
Manhattan is the heart of New York City, USA. Seeing the noise of hundreds of people, you must have realized how lively this city is. There is no difference between day and night here. That’s why this city is called ‘The City Never Sleeps’! If you search for the reason for this title, this iconic place of Manhattan will appear in front of your eyes, which is called – The Times Square! It is said to be one of the busiest places in the world.
What is the way without being busy, is there any? The location is at the intersection of Broadway, Seventh Avenue, and Forty-second Street.
For this reason, Times Square is also known as ‘The Cross Road of the World’ and ‘The Heart of the Great White Way’. The importance of this place cannot be confined to geographical boundaries. Times Square is also called by many as the heartbeat of New York City. Where the colorful display of hundreds of billboards and the bright colorful lights of thousands of lamps meet people’s hopes and dreams.
Summer, Monsoon or Winter – Times Square is bustling in all seasons. And day or night, people are always running, chatting and entertaining. That’s why it seems that the night is more crowded than the day, the whole world is full of tourists.
New Yorkers bring visitors from outside to see Times Square at least once. Which has become an invisible rule. Besides, there is regular traffic of tourists.
With 50 million tourists every year, Times Square is another name for culture and entertainment. About 350,000 people travel through Times Square every day. During the holidays, this number exceeds four and a half lakhs.
There is a small story behind its name. Earlier this place was called Long-Acre. In 1904, The New York Times moved its headquarters to the newly constructed Times Building, which was renamed Times Square. The New Year countdown, ball drop tradition started from this place in 1907. Which is still a highly anticipated event for millions of people around the world.
Busy with lights, this commercial center is also a tourist hotspot. Digital Billboard’s twenty-four-seven glossy display is bound to impress everyone. Times Square becomes more attractive at night because of these billboards.
When a new person comes to visit here, the first question that comes to mind is, why are there so many billboards in New York Times Square? There is no definitive answer to this eternal question. The interesting thing is that because of the high tourist presence here, the marketing companies find it profitable to advertise on billboards. Advertisements on big screens and billboards have become one of the means of tourist attraction.
Here are some examples of how effective these Times Square billboards are as advertisements.
A few days ago, the movie ‘Suranga’ directed by Raihan Rafi was a blockbuster hit in our country. The marketing team of ‘Suranga’ movie advertised the movie on a billboard in New York’s Times Square. This initiative to propagate among Bengalis living in the United States was not accepted, but did it have an effect in Bangladesh, thousands of miles away from New York? The answer was – of course – because, the day after the tunnel was advertised on the New York Times Square billboard, from the main newspapers of the country to online portals – this news was everywhere.
Muza was featured on the Spotify billboard in Times Square. The result was the same. The next day in the country’s media, from online to newspapers, everywhere this news.
Chirkut drummer Pavel Orin’s new project ‘The Living Room Session’ was also officially announced via Times Square billboard, featuring eight other Bangladeshi artists.
Let’s talk about Dhaka, day by day this city is becoming a vibrant city like New York City. There is no point in entering the Gulshan-Banani area. To the right and left, even if you look overhead, you can see tall modern buildings surrounded by glass. Twenty four-seven ads run on LED billboards at every turn. The night-day difference is decreasing. The restaurants are busy even in the middle of the night. Famous brand cars are also seen in abundance. Foreigners come to visit and find no difference, whether in Bangladesh or in any western country.
Who knows, in the future, the roundabout of Gulshan 2 in Dhaka may also become a crowded place like Times Square, the heart of New York. Don’t forget to let us know in the comments if you think so.
Thanks everyone.
Stay healthy, stay well.