শুভেচ্ছা ।
চোখ বন্ধ করে রিকশা নিয়ে ভাবুন তো? কি ভেসে উঠছে চোখের সামনে? ঢাকার এই ব্যস্ত নগরীতে কতগুলো রিকশা রাস্তায় আর আপনি ডাকছেন “নিউমার্কেট?
আমরা কি কখনো একটু সময় নিয়ে দেখেছি এই বাহনটিকে। এটি কি শুধুই একটি জড়বস্তু? শুধুই একটি বাহন? নাকি এর মধ্যে লুকিয়ে আছে কোনো আবেগ।
একটু সময় নিয়ে দেখলে বোঝা যাবে এই বাহনটিকে ঘিরে আছে একটি শিল্প। প্রতিদিনের ব্যবহৃত এই বাহনটি সজ্জিত থাকে বাহারি সব রঙ আর নকশাতে। নীল, সবুজ চোখের সিনেমার নায়ক-নায়িকা। কখনো আবার বনের হিংস্র প্রাণী বাঘ কিংবা সিংহ। আবার কখনো বা “মায়ের দোয়া”। রিক্সার সারা গায়ে লেপ্টে থাকা এই নকশা আর চিত্রকর্ম বাঙ্গালির ঐতিহ্যের প্রায় হারিয়ে যাওয়া এক নিদর্শন “রিকশাচিত্র”। যেটি একান্তই বাঙালির নিজস্ব সম্পদ। বিলুপ্তপ্রায় লোকশিল্পটি সম্পর্কে জেনে আসি চলুন।
রিক্সা জাপানের অভিজাত শ্রেণির হাত ধরে এলেও পরিবেশ দূষণহীন বাহন হিসেবে এটি এখন বাংলার সর্বসাধারণের অতি প্রয়োজনীয় যোগাযোগ মাধ্যম। অতি পরিচিত এই বাহনটিকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতেই রিকশাচিত্রের আবির্ভাব। শিল্পীরা মনের মাধুরি মিশিয়ে রঙ তুলি দিয়ে আঁকেন রিকশাকে। রিকশার হুড, বডিতে আঁকেন গ্রিক পুরানের পঙ্খীরাজের ঘোড়া, আরব্য রজনীর উপাখ্যান, আলাদীনের দৈত্য, রাজপ্রাসাদ, রাজকন্যা, পালকি, গ্রামীণ জনপদসহ আরও কত কি!
রিকশাকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে শিল্পীরা রিকশায় আঁকেন হালের জনপ্রিয় সব নায়ক নায়িকার প্রতিচ্ছবি। এভাবেই ববিতা, ফারুক, শাবানা, রাজ্জাকরা অমর হন এই শিল্পের অংশ হয়ে। “বেদের মেয়ে জোসনা” থেকে শুরু করে আরো অনেক জনপ্রিয় সব সিনেমার চরিত্রগুলোকে শিল্পীরা ফুটিয়ে তোলেন তাদের রঙ তুলির আচড়ে। এছাড়া বাঘ, সিংহ, শেয়ালের মুখ, গাছ, লতাপাতা, ফুল, তাজমহল এ সবতো আছেই।
এনামেল রঙের সাথে অকটেন বা কেরোসিন মিশিয়ে মূলত: রিকশাচিত্র শিল্পীরা ছবিগুলো এঁকে থাকেন। বাজারে এখন নানা ধরনের আধুনিক রঙ পাওয়া গেলেও রিকশা পেইন্টিং এর শিল্পীরা সেই আগের কেরোসিন মিশ্রিত রঙেই এঁকে চলেছেন তাদের চিত্রকর্ম।
এতক্ষণ তো জানলাম রিকশাচিত্রের ধরণ ও বৈচিত্র নিয়ে। কিন্তু কেনই বা আজ এটি বিলুপ্তপ্রায়? কখনো কী এর জৌলুস ছিলো না? অবশ্যই ছিলো।
আপনি কী জানেন, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম রিকশা এসেছিলো চট্টগ্রামে। রিক্সার উদ্ভাবক দেশ জাপান থেকে নয় বরং এটি আনা হয়েছিলো মিয়ানমারের রেঙ্গুন শহর থেকে। ঢাকায় প্রথম প্যাডেলচালিত রিকশা আসে ত্রিশের দশকে ভারতের কলকাতা থেকে। যদু গোপাল দ্ত্ত নামে নারায়ণগঞ্জের একটি পাট কোম্পানির কেরানি এই রিকশা এনেছিলেন। তিনিই ঢাকায় প্রথম রিকশার প্রচলন করেন।
রিকশার আর্বিভাব নিয়ে মজার একটি ঘটনা আছে। রিকশার প্রথম নকশা করেছিলেন জোনাথন স্কোবি নামের একজন মার্কিন খ্রিস্টান মিশনারী। পঙ্গু স্ত্রী এলিজাকে শহর দেখানোর ইচ্ছা থেকে দুই চাকার সামনে হাতল বিশিষ্ট একটি বাহনের নকশা করেছিলেন মি. জোনাথন। সেই বাহনই কালের বিবর্তনে রিকশা নামেই পরিচিতি পায়।
আমাদের দেশে রিকশার আবির্ভাবের সাথে প্রচলন ঘটে চিত্রশিল্পের। নিজের সাধের রিকশাগুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার ইচ্ছা থেকেই মূলত এই শিল্পটির সৃষ্টি। রিক্সার হুড, বেল, পা রাখার জায়গা, মেটালিক বডি ও পাত – সব জায়গায় রঙের কারুকাজ আর নকশা ফুটিয়ে তোলাই ছিল এই রিকশাচিত্রের উদ্দেশ্য। এই শিল্পের হাত ধরে- সুনীল, আর কে দাশ, আলাউদ্দিন, আলী নূর, দাউদ ওস্তাদসহ আরো অনেকে বেশ নাম কুড়িয়েছিলেন। ধীরে ধীরে বংশপরম্পরায় এই শিল্প ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ ২০ থেকে ২৫ বছর, এমনকি ৫০ বছর ধরে এই শিল্পের সাথে যুক্ত।
অঞ্চলভেদে রিকশাচিত্রের বেশ ভিন্নতা ছিলো। যেমন- ঢাকায় ছিলো সিনেমা তারকাদের ছবি, আবার রক্ষণশীল সিলেটের চিত্রশিল্পীদের থেকে আসে “মায়ের দোয়া”, “আল্লাহ হাফেজ” এর মতো চিরপরিচিত কিছু চিত্র শিল্প। খুলনা অঞ্চলে ছিলো ট্রেন বা বিমান চলাচলের ছবি। ঈদ মোবারাক, চাঁদ তারার চিত্রও স্থান পায় এই চিত্রশিল্পে।
এছাড়াও ঢাকার রিকশাতে আঁকা হয় মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, মার্শাল’ল, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ছয় দফার চিত্র। সে সময়ের ত্যাগ, শোষণ, নিপীড়ন এর চিত্র থেকে শুরু করে ঘাতক দালালদের ব্যাঙ্গচিত্রও ফুটিয়ে তোলেন শিল্পীরা। বাঙালীর নানা অর্জন স্থান পায় তাদের ক্যানভাসে।
আবার ষাটের দশকে রিকশার গায়ে মানুষের ছবি নিষিদ্ধ করা হলে তখন পশুর ছবি আঁকার ধুম পড়ে। নায়ক-নায়িকার ছবিযুক্ত রিকশা আবারো ফিরে আসে সত্তুর দশকের শেষের দিকে।
তখন সময় এমন ছিলো, কে কত সুন্দর রিকশায় আলপনা করতে পারে তা নিয়ে চলতো প্রতিযোগিতা। রাতের পর রাত খেটে চিত্রশিল্পীরা রিকশায় আকঁতেন কত শত মুখ। চমৎকার সব নকশা আর চিত্র সম্বলিত নতুন রিকশা যখন নামত পাড়া-মহল্লায় তখন হৈ চৈ পড়ে যেত। আলোচনা হতো ওই চিত্রশিল্পী নিয়ে। রিকশা পেইন্টিং এর তুমুল জনপ্রিয়তা ছিল ২০০০ সালের আগ পর্যন্ত।
জৌলুসে ভরা এই লোকশিল্প কেন আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে? মূলত: ২০০০ সালের পর থেকে জনপ্রিয় হতে থাকে ডিজিটাল প্রিন্টিং। মানুষ তখন সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচাতে ছুটে প্রিন্টিং এর পেছনে। এতে বড়সড় ধাক্কা খায় রিকশা পেইন্টিং শিল্প। আগে যেখানে একটি রিকশাচিত্র করতে আট থেকে নয় ঘণ্টা লাগতো সেখানে এখন প্রিন্ট করতে সময় লাগছে অনেক কম। আবার খরচও ১৫০০ টাকা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে তিনশো কিংবা চারশো টাকা। তাই হাতে আঁকা শিল্প ছেড়ে মানুষ প্রিন্টিং এ ঝুঁকে পড়ে। এভাবেই ধীরে ধীরে কমতে থাকে এর প্রচলন। ফলে রিকশাচিত্র শিল্পীরা বাধ্য হয় পেশা পাল্টাতে।
তবে কিছু শিল্পী নানা প্রতিকূলতার মাঝেও বিলুপ্তপ্রায় এই লোকশিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।তারা এখন রিকশা ছেড়ে সিএনজি, ট্রাক কিংবা ভ্যানেই ফুঁটিয়ে তুলছেন চিত্রকর্ম। এক্ষেত্রে তারা শিল্পটিকে অর্থের মানদন্ডে রাখতে চান না। তাই টাকা কম পেলেও বংশপরম্পরায় চলে আসা এই শিল্পটি তারা ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর। এরিমধ্যে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ঢাকার রিকশা ও রিকশা পেইন্টিং।
সরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় বতর্মানে অনেকটা বেসরকারি উদ্যোগেই এই শিল্পটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু তরুণ চায়ের কাপ, প্লেট, জগ নানা তৈজসপত্রে এই চিত্রকর্ম ব্যবহার করছে। অবশ্য বর্তমানে কিছু তরুণ শাড়ি, বিছানার চাদর সহ ঘরের পর্দা এই রিক্সাপেইন্টিং এর ব্যবহার করছে। এতে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে এই হস্তশিল্পে।
রিকশা পেইন্টিং এর সাথে জড়িত উদ্যোক্তা ও শিল্পীদের উৎসাহিত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদসহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠান রিক্সাপেইন্টিং নিয়ে প্রদর্শনী করে থাকে। এছাড়াও জাপান, নেপাল, ভুটান, ভারতসহ আরো অনেক দেশের প্রদর্শনীতে অংশ নেয় বাংলাদেশের চিত্রশিল্পীরা। আবহমানকাল গ্রাম বাংলার এই সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ২০২১ সালের মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ শিরিন আকতার তার দুই বন্ধুকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির চায়ের দোকান সহ আশেপাশের সবটুকু অংশ রাঙিয়ে দেন রিকশাপেইন্টিং এর মাধ্যমে।
কালের পরিক্রমায় ফিকে হতে থাকা এই শিল্পটিকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের সবার। হয়তো রিক্সায় নয়, নতুন আংগিকে, নতুন ভাবে এই শিল্পকে আমরা ধারণ করতে পারি সংস্কৃতিতে। এতে একইসাথে মূল্যায়ন হবে শিল্পীর আর টিকে রইবে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের খেতাব পাওয়া শতবছরের পুরোনো রিক্সাপেইন্টিং, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংস্কৃতি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
The Age of Rickshaw Painting
Greetings
Close your eyes and think about the Rickshaw? What is floating in front of the eyes? So many rickshaws are on the road in this busy city of Dhaka and you call it, hello will you go “Newmarket”?
Have we ever taken a moment to look at this vehicle? Is it just an object? Just a vehicle? Or there is an emotion hidden in it?
Take a look and you will understand that there is an industry surrounding this vehicle. This daily used vehicle is equipped with all kinds of colors and designs. Blue, green eyed movie hero-heroine, ferocious animals like tigers or lions or “Mayer Doa”. This design and painting painted all over the rickshaw is an almost lost form of Bengali tradition called “Rickshachitra”. Which is exclusively Bengali’s own wealth. Let’s learn about the extinct folk art.
Although the rickshaw came into the hands of the elite class of Japan, it is now a very necessary means of communication for the people of Bengal as a pollution-free vehicle. The appearance of rickshaws is to make this well-known vehicle attractive. The artists painted the rickshaw by mixing the colors of their hearts. Rickshaw hood, painted on the body of Pankhiraz horse of Greek mythology, legend of Arabian resin, Aladdin’s monster, palace, princess, palanquin, rural town and much more!
To make the rickshaw more attractive, the artists painted images of all the popular heroes and heroines on the rickshaw. This is how Bobita, Farooq, Shabana, Razzak became immortal by being a part of this industry. Starting from “Beder Mey Josna” and many other popular movie characters, the artists depict their colors in brush. Besides tiger, lion, fox’s face, trees, foliage, flowers, Taj Mahal are all there.
Mainly Rickshaw artists paint pictures by mixing octane or kerosene with enamel paint. Although there are many modern colors available in the market, the rickshaw painting artists continue to paint their paintings with the old kerosene mixed colors.
So far I have known about the types and variations of rickshaw paintings. But why is it extinct today? What has never been jealous? Of course there was.
Did you know that, the first rickshaw in Bangladesh came to Chittagong. The inventor of the rickshaw was not from Japan but it was brought from the city of Rangoon in Myanmar. The first pedal-powered rickshaws came to Dhaka in the thirties from Calcutta, India. The rickshaw was brought by Jadu Gopal Dutta, a clerk of a jute company in Narayanganj. He introduced the first paddled rickshaw in Dhaka.
There is an interesting incident about the origin of the rickshaw. The rickshaw was first designed by an American Christian missionary named Jonathan Scobie. He designed a two-wheeled vehicle with handles in front of his crippled wife Eliza Jonathan to show him around the city. That vehicle came to be known as rickshaw over time.
With the advent of rickshaws, painting came into vogue in our country. The creation of this art is mainly due to the desire to decorate the rickshaws of the saints. The aim of this rickshaw painting was to showcase the rickshaw hood, the bell, the footrest, the metallic body and the leaf – the color craftsmanship and design everywhere. Sunil, RK Das, Alauddin, Ali Noor, Dawood Ustad and many others made a name for themselves through this industry. Gradually this art spread from generation to generation. Some have been in the industry for 20 to 25 years, even 50 years.
There was quite a difference in the rickshaw picture depending on the region. For example, there were pictures of movie stars in Dhaka, and some well-known paintings like “Mayer Doa”, “Allah Hafez” came from conservative Sylhet painters. There were pictures of train or air traffic in Khulna region. Eid Mubarak, moon and star images are also included in this painting.
Besides, images of liberation war, language movement, martial law, mass uprising of 1979, “Choy Dofa” were painted on the rickshaws of Dhaka. Starting from the image of sacrifice, exploitation, oppression of that time, the artists also painted caricatures of murderous brokers. Various achievements of Bengalis are found in their canvas.
Again in the 60s, when pictures of people were banned on rickshaws, animal pictures became popular. The hero-heroine rickshaw made a comeback in the late seventies.
At that time, there was a competition to see who could ride the most beautiful rickshaw. Night after night the painters drew hundreds of faces in the rickshaw. When the new rickshaws with all the beautiful designs and images used to come down in the neighborhoods, there was a lot of cheering. The painter was famous overnight. Rickshaw painting was very popular till 2000.
Why is this folk art filled with passion today on the verge of extinction? Digital printing became popular after 2000. People then rushed to printing to save both time and money. The rickshaw painting industry took a big hit. Where earlier it took eight to nine hours to make a rickshaw picture, now it takes much less time to print. Again the cost has reduced from 1500 taka to three hundred or four hundred taka. So people left the art of hand painting and turned to printing. In this way, its circulation gradually decreases. As a result, rickshaw artists are forced to change their profession.
However, some artists are trying their best to keep this folk art alive in spite of various adversities. They are now leaving rickshaws and painting in CNG, trucks or vans. In this case, they don’t want to keep the industry in terms of money. So even if they get less money, they are determined to keep this industry passed down from generation to generation. In the meantime, Dhaka’s rickshaws and rickshaw paintings have been included in UNESCO’s world heritage list.
As there is no government initiative, now a lot of private initiatives are trying to bring back this industry. Some young people are using this painting on tea cups, plates, jugs and various other products. However, currently some young people are using this Rickshaw Painting for sarees, bed sheets and room curtains. It gives new possibilities to this craft.
To encourage entrepreneurs and artists involved in rickshaw painting, Dhaka University Faculty of Fine Arts and some other institutions hold exhibitions on rickshaw painting. Besides, Bangladeshi painters participated in the exhibition of many other countries including Japan, Nepal, Bhutan and India. In order to spread this culture of modern village Bengal among the new generation, 2021 Miss Universe Bangladesh Shirin Akhtar along with her two friends painted all the surrounding areas including the TSC tea shop of Dhaka University through rickshaw painting.
It is the responsibility of all of us to bring back this fading industry. Maybe not in a rickshaw, but in a new dress, in a new way, we can capture this art in culture. It will simultaneously evaluate the artist and preserve the century-old rickshaw painting, our heritage, our culture, which has been awarded the title of UNESCO World Heritage.
Thanks everyone.
Stay well, stay healthy.