শুভেচ্ছা সবাইকে।
ক্ষুধা ও দারিদ্র্য। ছোট বয়স থেকেই এই দুটি শব্দ শুনতে শুনতে আমাদের মাথায় গেঁথে গেছে। বিশেষ করে যারা গ্রামে বেড়ে উঠেছেন, তাদের কাছে এই দুটি শব্দের ব্যাখ্যা অন্যরকম, মানে আরেকটু বিস্তৃত। এই কথা কেন বললাম তা একটু পর খোলাসা করছি। তার আগে ছোট বেলার একটি স্মৃতি শেয়ার করি।
তখন আমার বয়স আনুমানিক ৯ কি ১০। মফস্বল শহরে থাকতাম। সেই সময়টায় কেউ সাহায্য চাইতে বাড়িতে আসলে আমি দৌঁড়ে গিয়ে এক বাটি চাল দিয়ে সহায়তা করতাম। অনেকে আবার ডাল, তেল এসব চাইতো। সেগুলোও দিয়েছি অনেকবার। পাড়া-মহল্লায় মূলত সবাই সবাইকে চেনে। তাই যারা সাহায্য চাইতে আসতো, দেখা যেতো তারাও পরিচিত। এজন্য অনেক সময় আমার মা তাদের খাবার খেতে দিতেন। কিংবা ক্ষেতের কোন শাকসবজি বা তরি-তরকারি দিয়ে দিতেন। অবশ্য এই প্র্যাকটিস অনেক আগের। এটা কিভাবে এসেছে, সেদিকে খেয়াল করলে, মাথায় আসবে ওই যে ভিডিওর শুরুতে বলা শব্দ দুটি – ক্ষুধা আর দারিদ্র্য।
তখন মানুষের ঘরে ঘরে অভাব। খেতে পেত না। তাই তাদের কাছে অন্য সবকিছুর চেয়ে বেঁচে থাকার জন্য দু’বেলা খাবার জোগাড় করাই ছিলো চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এখন, সময় পাল্টে গেছে। চাল-ডাল, তেলের পরিবর্তে সবাই টাকা দিয়ে সহায়তা করে। অবশ্য যারা সাহায্য চাইতে আসে তারও আগের মতো চাল-ডাল নিতে চায় না। তাহলে কি মানুষের মধ্যে আর ক্ষুধা নেই? স্থান-কাল-পাত্র ভেদে এই প্রশ্নের উত্তর একেক রকম হলেও, একটা কথা নিরেট সত্য, যাদের দু’বেলা খাবার জোগাড়ের টেনশন নাই, তারা খাবার অপচয় নিয়ে একবারও চিন্তা করেন না।
তার ওপর, এখন নগরবাসীর বিনোদনের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে রেস্টুরেন্ট। দুঃখজনক বিষয় হলো, রেস্টুরেন্টে গিয়ে যতো না খেতে পারবে তার চেয়ে বেশি খাবার অর্ডার করে নষ্ট করা হচ্ছে। যারা কাজটি করেন তাদের বলছি- কখনো কাউকে ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে খাবার খেতে দেখেছেন?
(ডাস্টবিন থেকে তুলে খাবার খাচ্ছে এমন দৃশ্য স্লো মোশন এবং করুণ মিউজিক যাবে- ১০ সেকেন্ড)
এবার বলুনতো আমরা করছিটা কী?
আপনারা কী জানেন, প্রতিবছর কত খাবার নষ্ট হচ্ছে বিশ্বে? কত মানুষ না খেয়েই দিনের পর দিন ঘুমোতে যায়?
উত্তরটা পাওয়া যায় ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের সমীক্ষায়। তাদের হিসেব মতে, বিশ্বে প্রতি মাসে ১০ হাজার শিশু মারা যায় না খেতে পেয়ে। আর প্রতি রাতে না খেয়ে ঘুমায় ৮২ হাজার মানুষ। অথচ প্রতিবছর প্রায় ১৩০ কোটি টন খাবার নষ্ট হয়, যা বিশ্বে মোট উৎপাদিত খাদ্যের তিনভাগের এক ভাগ। যদি এই অপচয় না হত তাহলে এই খাবার দিয়ে প্রতিবছর প্রায় ২০০ কোটি মানুষকে পেট ভরে খাওয়ানো যেত। এসব ডেটা দেখে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, কেন ঢালাওভাবে সবাইকে খাবার অপচয়ের জন্য দায়ী করছিলাম এতক্ষণ।
সামগ্রিক আলাপ বাদ দিয়ে যদি বাংলাদেশের কথা বলি, তাতেও আপনারা অবাক হবেন। কারণ আমি কিংবা আপনি প্রত্যেক বছরে ৬৫ কেজি খাবার নষ্ট করি। এখন হয়তো ভাবছেন, এতো খাবার নষ্ট করলাম কখন?
উত্তরটা পাবেন জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইউনেপের ২০২১ সালের ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্টে। এই রিপোর্টেই উঠে এসেছে তথ্যটি। সত্যি বলতে, আমাদের দেশে খাবার নষ্ট হচ্ছে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি। কেন বললাম, তার একটা পরিসংখ্যান দেই। যুক্তরাষ্ট্রে মাথাপিছু খাদ্য অপচয়ের পরিমাণ ৫৯ কেজি, রাশিয়ায় ৩৩, আয়ারল্যান্ডে ৫৫, নিউজিল্যান্ডে ৬১ এবং জাপানে ৬৪ কেজি। এই ডেটা দেখেই তো বোঝাই যায়, খাবার-দাবারে দেশের উচ্চবিত্তরা বেশ বাদশাহী ঢংয়েই চলছে।
বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির আরেকটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ফসলের মাঠ থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত আসতে প্রতিবছর দেশে ৩৭ লাখ টনের বেশি খাবার নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে, বছরজুড়ে বাড়িতে খাবার অপচয়ের পরিমাণ প্রায় ১ দশমিক ০৭ কোটি টন। সবমিলিয়ে বছরে অপচয় ও নষ্টের পরিমাণ ১ কোটি ৪৫ লাখ টন। এই খাবার যদি নষ্ট না হতো তাহলে এই খাদ্য দিয়ে ১৬ কোটি মানুষকে তিন মাস বসিয়ে খাওয়ানো যেত।
সারা দুনিয়াতে প্রতি বছর যত খাবার উৎপাদন হয় তার একটি বড় অংশ মাঠ থেকে আর খাবার টেবিল পর্যন্ত পৌঁছায় না। তার আগেই ভাগাড়ে চলে যায়। খাদ্য অপচয় কামনোর লক্ষ্যে বহু আগে থেকেই বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে জাতিসংঘ সব প্ল্যাটফর্মেই কম আলোচনা হয়নি। অনেকে উদ্যোগীও হয়েছিলেন। কিন্তু সাড়া না পেয়ে থেমে গেছেন। তেমনই একটি ঘটনা বলি।
সালটা ১৯৯৯। তখনো ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, জি-মেইল আসেনি। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত এমআইটির দুই গবেষক উইল গ্লেসনেস এবং জন ফার্গুসন আবিষ্কার করেছিলেন অভিনব একটি প্রযুক্তির। যার নাম ছিলো ফুডক্যাম। নাম শুনলেই বোঝা যায়, খাবার সংশ্লিষ্ট কিছু একটা। আসলেই এটা ছিলো একটি ক্যামেরা। যা বসানো হয়েছিলো এমআইটির মিডিয়া ল্যাবের কিচেনে। উদ্দেশ্য ছিলো খাবারের অপচয় কমানো। এই প্রযুক্তির সাহায্যে মিডিয়া ল্যাবের সদস্যরা নিজেদের বেঁচে যাওয়া খাবারের ছবি এই ফুড ক্যামে তুলে রাখতেন। আর এই ক্যামেরা সংক্রিয়ভাবে এসব খাবারের ছবি সম্বলিত এমএমএসে নোটিফিকেশন দিতো অন্যদের। যারা ক্ষুধার্থ তারা নোটিফিকেশন দেখে সেখানে এসে খাবারগুলো খেয়ে নিতেন। এতে খাবারের অপচয় একেবারেই কমে আসে। এই গল্প ২৫ বছর আগের। তাহলে বুঝুন, খাবার অপচয় বন্ধে কতো আগে থেকেই মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে।
খাদ্য অপচয়ের ক্ষেত্রে উন্নত-উন্নয়নশীল কোন দেশই বাদ যায় না। তফাৎটা শুধু উন্নয়শীল দেশে উৎপাদনের পর সংরক্ষণের অভাবে ৪০ ভাগ খাদ্য শস্য নষ্ট হয়। আর উন্নত দেশে সমপরিমাণ খাবার নষ্ট হয় খুচরা বা ভোক্তা পর্যায়ে। মানে নষ্ট হচ্ছেই। কখনো কাঁচা বাজারে গেলে তা বুঝতে পারবেন। দেখবেন পায়ের নীচে পড়ে আছে পঁচে যাওয়া টমেটো, মরিচ, শসার সবজি আর ফলমূল।
টেইসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ বিশ্বে খাদ্য অপচয় অর্ধেকে নামিয়ে আনতে কাজ শুরু করেছে। কিন্তু এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা ব্যক্তিগত পর্যায়ে আদৌ কতটুকু সচেতন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
খাবার অপচয় নিয়ে সম্প্রতি আরেকটি তথ্য গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। তা হলো- বিশ্বের মোট খাদ্য অপচয়ের ৫০ শতাংশ হয় নাকি সৌদি আরবে। জাতিসংঘের ফুড ওয়েস্ট প্রোগ্রামের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে খাদ্য বর্জ্যের জন্য প্রতি বছর ৪০ বিলিয়ন রিয়াল ক্ষতি হয়। সেখানে খাদ্য অপচয়ের হার ৩৩ শতাংশেরও বেশি। অবশ্য ইউটিউবের বদৌলতে সৌদি শেখদের থালায় আস্ত গরু, খাসির, দুম্মার রোস্টের ভিডিও দেখেই অনেকেই এই আন্দাজ হয়তো আগেই করে রেখেছেন।
খাবারের অপচয় শুধু সৌন্দর্য নষ্ট করে না পরিবেশেরও ক্ষতি করে। ফেলে দেয়া খাবার মাটির ভৌত রাসায়নিক ও জৈব গুণ কমিয়ে দেয়। এমনকি গ্রীনহাউস গ্যাসের ৮ ভাগ সৃষ্টি হয় এই খাদ্য বর্জ্য থেকে। এছাড়াও খাবারের ময়লা-আবর্জনা পচে পানি দূষিত করছে, মারা যাচ্ছে জলজ প্রাণী, বাড়ছে পানিবাহিত রোগ। খাবার পঁচে তৈরি করে নাইট্রাস অক্সাইড এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মতো ক্ষতিকারক গ্যাস। গবেষণা তথ্য বলছে, বিশ্বের অপচয় হওয়া খাদ্যকে যদি একটি দেশ হিসেবে কল্পনা করা হতো, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর সর্বাধিক কার্বন নি:স্বরণকারী দেশ হতো এটি। তাহলে বুঝতেই পারছেন, খাবার নষ্ট করে আমরা শুধু অভুক্তদের প্রতি অবিচার করছি না, সেই সাথে পরিবেশেরও বারোটা বাজাচ্ছি।
খাদ্য ব্যবস্থাপনায় অনেক দেশ সচেতনতার পরিচয় দিয়েছে। ইকোনমিস্ট ইমপ্যাক্ট পরিচালিত ২০২১ সালের ফুড সাসটেইনেবিলিটি ইনডেক্স বলছে, খাদ্য ক্ষতি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সেরা দেশগুলোর মধ্যে আছে কানাডা, ইতালি, জার্মানি, জাপান ও নেদারল্যান্ডসের নাম।
এই দেশগুলো কেন সেরা সেই ব্যাখ্যাটা পাবেন এই ঘটনায়। ভারতের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রতন টাটার নাম তো শুনেছেন। তিনি জার্মানির একটি রেঁস্তোরায় খেতে গিয়েছিলেন। ক্ষুধার্থ থাকায় রেঁস্তোরায় ঢুকে রতন টাটার সহযোগী অনেক বেশি খাবারের অর্ডার দিয়ে ফেলেন। কিন্তু পরে দেখা গেলো যা অর্ডার করেছেন, তার তিনভাগের একভাগও শেষ করতে পারেননি। আর খাবার নষ্টের অপরাধে সেবার ৫০ ইউরো জরিমানা গুনতে হয়েছিলো রতন টাটাকে। এই সামান্য অর্থ জরিমানা রতন টাটার জন্য বড় কোনো বিষয় না হলেও সেই দিনের শিক্ষাটা হয়তো তিনি কখনো ভুলবেন না।
খাদ্য অপচয় কমাতে আহামরি হাতি-ঘোড়া মারতে হবে না। প্রয়োজন একটু সচেতনতা। যেমন প্রতিটি পরিবারে প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণে রান্না করা। প্রয়োজনের বেশি খাবার না কেনা এবং অভাবীদের উদ্বৃত্ত খাবার দিয়ে দেয়া। বিশ্বের অনেক দেশের রেস্টুরেন্টে দেখা যায়, প্রতিদিনে বেঁচে যাওয়া খাবার অভুক্তদের মাঝে বিলিয়ে দেয়। আমাদের দেশেও এই চর্চা শুরু হয়েছে। কিন্তু তা এখনো খুব সীমিত। শুধু রেস্টুরেন্ট নয়, বাসা-বাড়িতেও এই চর্চা চালু করা জরুরি।
ছোট ছোট এসব বিষয় খেয়াল রাখলে, ডাস্টবিন থেকে আর কোন মানুষকে কুড়িয়ে খেতে হবে না। অভুক্ত পেটে ঘুমাতে হবে না আর কাউকে। হয়তো এভাবেই আস্তে আস্তে পৃথিবী থেকে মুছে যাবে ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষের মতো শব্দগুলো।
ধন্যবাদ সবাইকে। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
Food waste
Hunger and poverty. These two words are ingrained in our minds from a young age. Especially for those who grew up in villages, these two words have a different interpretation, meaning a little wider. I will explain why I said this a little later. Before that, let me share a childhood memory.
I was about 9 or 10 then. I used to live in Mafswal city. At that time, when someone came home asking for help, I would run and help with a bowl of rice. Many people wanted pulses and oil. I have given them many times. Basically everyone knows everyone in the neighborhood. So those who came to ask for help were also known. That’s why my mother used to give them food. Or he would give some vegetables or curries from the field. Of course, this practice dates back a long time. If you look at how it came about, the two words mentioned at the beginning of the video will come to mind – hunger and poverty.
At that time, there was a lack of people from home to home. could not eat So, more than anything else, the challenge for them was to get two meals a day to survive. But now, times have changed. Everyone helps with money instead of rice-dal, oil. Of course, those who come to ask for help do not want to take rice and pulses as before. So people are no longer hungry? Although the answer to this question is different depending on the place, time and place, one thing is absolutely true, those who do not have the tension of getting two meals a day, do not even think about food wastage.
Moreover, the restaurant has now become the center of entertainment for the city dwellers. Sadly, restaurants are wasting more food by ordering more than they can eat. To those who do the work – have you ever seen someone pick food from the dustbin and eat it?
Now tell me what we are doing?
Do you know how much food is wasted in the world every year? How many people go to sleep day after day without eating?
The answer can be found in a study by the World Food Program. According to their calculations, 10,000 children die every month in the world due to malnutrition. And every night 82 thousand people sleep without food. But every year about 130 million tons of food is wasted, which is one third of the total food produced in the world. If there was no wastage, this food would have fed nearly 2 billion people every year. After seeing these data, you must have understood why I have been blaming everyone for food waste for so long.
If we talk about Bangladesh, you will be surprised. Because you or I waste 65 kg of food every year. Now you may be thinking, when did I waste so much food?
The answer will be found in the 2021 Food Waste Index report of the United Nations Environment Agency, UNEP. The information has emerged in this report. Frankly, our country wastes more food than Japan and USA. Why did I say, I will give you a statistic. Per capita food waste is 59 kg in the United States, 33 in Russia, 55 in Ireland, 61 in New Zealand and 64 kg in Japan. By looking at this data, it can be understood that the upper classes of the country are running in a royal fashion.
Another statistic by the Bangladesh Bureau of Statistics and the United Nations Environment Program shows that more than 3.7 million tons of food is wasted every year in the country from the crop field to the kitchen. On the other hand, the amount of food wastage at home is around 1.07 crore tonnes throughout the year. Total amount of wastage and wastage is 1 crore 45 lakh tons per year. If this food was not wasted then 16 crore people could have been fed for three months with this food.
A large portion of the food produced each year around the world never makes it from the field to the table. He left before that. The goal of reducing food waste has long been discussed in all platforms, from the World Food Programme, the World Health Organization to the United Nations. Many were also enterprising. But he stopped without getting a response. Let me tell you one such incident.
The year is 1999. Facebook, WhatsApp, G-mail did not come then. Will Glasnes and John Ferguson, two researchers from the world-famous MIT in the United States, discovered a novel technology. whose name was Foodcam. Just hearing the name suggests that it is something related to food. It was actually a camera. Which was installed in the kitchen of MIT’s Media Lab. The aim was to reduce food wastage. With the help of this technology, the members of the media lab used to take pictures of their leftover food on this food cam. And this camera would proactively give notification to others in MMS containing pictures of these foods. Those who were hungry would see the notification and come there and eat the food. It reduces food wastage completely. This story is 25 years ago. So understand, how long ago efforts are being made to make people aware of food wastage.
No advanced-developing country is spared when it comes to food waste. The only difference is that in developing countries, 40 percent of food crops are wasted due to lack of storage after production. And in developed countries, the same amount of food is wasted at the retail or consumer level. It means it is wasted. If you ever go to the raw market, you will understand it. You will see rotten tomatoes, peppers, cucumber vegetables and fruits lying under your feet.
The United Nations has set out to halve global food waste by 2030 to meet the 2030 SDGs. But the question remains as to how much we are aware of this goal at the individual level.
Another issue recently made headlines about food waste. That is – 50 percent of the world’s total food waste is in Saudi Arabia. According to data from the United Nations Food Waste Program, food waste costs the country 40 billion riyals every year. The rate of food wastage there is more than 33 percent. Of course, thanks to YouTube, many people may have already made this guess by watching the videos of roast beef, khasir, and dumma on the plate of Saudi sheikhs.
Wasting food not only spoils the beauty but also harms the environment. Discarded food reduces the physicochemical and biological quality of soil. Even 8% of greenhouse gases are generated from this food waste. Also, rotting food waste is polluting the water, killing aquatic animals, and increasing water-borne diseases. Rotting food produces harmful gases like nitrous oxide and carbon dioxide. According to research data, if the world’s food waste were visualized as a country, it would be the largest carbon emitter after the United States and China. So you understand, by wasting food, we are not only doing injustice to the hungry, but also harming the environment.
Many countries have shown awareness in food management. According to the 2021 Food Sustainability Index conducted by Economist Impact, Canada, Italy, Germany, Japan and the Netherlands are among the best countries in terms of food loss and waste management.
Why these countries are the best will be explained in this case. You have heard the name of India’s richest businessman Ratan Tata. He went to eat in a restaurant in Germany. Being hungry, Ratan Tata’s associate entered the restaurant and ordered too much food. But later it was seen that he could not finish even one third of what he ordered. And Ratan Tata had to pay a fine of 50 euros for the crime of food waste. Although this small fine was not a big deal for Ratan Tata, he may never forget the lesson of that day.
No need to kill elephants and horses to reduce food wastage. A little awareness is required. For example cooking a certain amount as per the requirement of each family. Not buying more food than needed and giving surplus food to the needy. Restaurants in many countries around the world distribute leftover food to the hungry. This practice has also started in our country. But it is still very limited. It is important to start this practice not only in restaurants but also in homes.
If you take care of these small things, no one will have to collect food from the dustbin. No one should sleep on an empty stomach. Maybe this way words like hunger and famine will be slowly erased from the world.
Thanks everyone. Stay healthy, stay well.