এই ভিডিওটি নিশ্চয়ই ফোনে কিংবা পিসিতে দেখছেন… আপনাদের কাছে প্রশ্ন: একজন সাধারণ মানুষ দিনে কতবার ফোন চেক করে? নির্দিষ্ট সংখ্যাটা বলা না গেলেও উত্তরটা ১০০ বারের আশেপাশে। এটা কিন্তু আমি বলছি না, অ্যামেরিকান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাসুরিয়ন দিয়েছে এই ডেটা। তারা আরও বলছে, প্রতিটি মানুষ ১০ মিনিট পর পর ফোন চেক করে। এমন ঘন ঘন মানুষ কেন ফোনের স্ক্রিন দেখেন, এটা কি প্রয়োজন, নাকি আসক্তি? আপনাদের কী মনে হয়? এসব প্রশ্নের উত্তরই জানবো…
প্রযুক্তি এখন খুববেশি সহজলভ্য হয়ে পড়েছে, স্মার্টফোন, কম্পিউটার, আর ট্যাব সবার ঘরে ঘরে। এমনকি বাসার টিভিটাও স্মার্ট। চাইলেই এক ক্লিকে চলে যাওয়া যায় বিশ্বের যে কোন প্রান্তে। পার্সোনাল কিংবা অফিসিয়াল সব যোগাযোগই এখন ডিভাইস নির্ভর। দুই যুগ আগের কথা ভাবুন। শুধু কল করা কিংবা ম্যাসেজ পাঠানোর জন্য আমরা ফোনের ব্যবহার করতাম। অনেকেই বলতে পারেন, তখন কল রেট বেশি ছিলো, ইন্টারনেট সহজলভ্য ছিলো না। তাই এর ব্যবহারও ছিলো সীমিত। সত্যি বলতে বিষয়টা অনেকখানি ঠিক।
ইন্টারনেট আসার পর আমাদের ডিভাইস নির্ভরতা অনেক বেশি বেড়েছে। ২০২১ সালে পিউ রিসার্চের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যামেরিকার ৬৯ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এবং টুইটার ব্যবহার করেন। এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও দৈনন্দিন সব কাজে আমরা ডিভাইস ব্যবহার করছি। আর সেই কারণে হোয়াটস অ্যাপ-ম্যাসেঞ্জার কিংবা জি-মেইলের নোটিফিকেশনের শব্দ শুনলেই অস্থির হয়ে ফোন হাতে নেই। দুই মিনিট দেরি হলেই যেন সব শেষ।
ডিজিটাল ডিভাইসের নির্ভরতা কি প্রয়োজন মেটাচ্ছে নাকি আসক্তির দিকে ঠেলছে? এই প্রশ্নের উত্তরে যাবার আগে চলুন কিছু গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য জেনে আসি। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান টেকজুরির গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের প্রায় ৫৯ শতাংশ ঘুমাতে যাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে এবং ঘুম থেকে ওঠার ৩০ মিনিটের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া চেক করে। আপনি বলতে পারেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে তো যোগাযোগ হচ্ছে। পরিবারের সদস্যরা বা বন্ধুরা কোথায় কী করছে তা দেখছি, জানতে পারছি, কমেন্ট করছি।
কিন্তু একটু অন্যভাবে ভাবলে দেখবেন, ডিভাইস নির্ভর যোগাযোগে বেশি মনোযোগ দিতে গিয়ে আপনি সবচেয়ে কাছের মানুষগুলোর খোঁজ খবর নিতে ভুলে যাচ্ছেন। বাসায় ঢুকে ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন, নিজের বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানকে সময় দিচ্ছেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটাতে গিয়ে সামনের মানুষটার সঙ্গে কথা বলতে ভুলে যাওয়ার ফলে বাড়ছে অভিমান, ভুল বুঝাবুঝি।
এতো গেল সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কথা। ডিভাইসের কারণে আমরা দিনে দিনে অলস হয়ে পড়ছি। হাঁটা দূরত্বে বাজার হলেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য ঢুঁ মারছি অনলাইন শপে। এতে শরীরে ফ্যাট জমে ডায়বেটিস আর স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ছে ।
ডিভাইস নির্ভরতা তরুণদের মাঝে হতাশাও বাড়িয়ে দিচ্ছে। জ্যামা পেডিয়াট্রিক্সের জরিপে দেখা গেছে, তরুণরা যত বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে, তাদের মধ্যে বিষন্নতা ততো বাড়ছে। কারণ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে অন্যদের পোস্ট করা ছবি বা ভিডিও দেখে অনেকে তাদের সংগে নিজেদের তুলনা করে বসে। এক্ষেত্রে হাতাশা আর অশান্তি বাড়ে, নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়।
ক্লিনিক্যাল স্লিপ মেডিসিন জার্নালে বলা হয়েছে, দীর্ঘক্ষণ ফোন বা পিসির স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে ঠিক মতো ঘুম হয়না। সেইসাথে মাইগ্রেন, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার মতো জটিলতা তো আছেই। ঘুমের উপর সেলফোন, কম্পিউটারের মতো জনপ্রিয় ডিভাইসের প্রভাব বিষয়ে এক গবেষণায় দেখা যায়, স্ক্রিন থেকে যে আলোটা চোখে আসে তা আমাদের শরীরের মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এর ফলে ঘুম আসেনা।
এবার আাসি এ আসক্তি কিভাবে কমাবেন, সেই আলোচনায়. . . .
ডিভাইসের প্রতি আসক্তি কমানোর বহু উপায় আছে। এরমধ্যে জনপ্রিয় উপায় হিসেবে গবেষকরা ডিজিটাল ডিটক্স প্রযুক্তিকেই ওপরে রাখেন। এটা একধরনের প্র্যাকটিসও বলা যেতে পারে। ডিজিটাল ডিটক্সের মূল কথাই হলো- একজন ব্যক্তিকে ইন্টারনেট নির্ভর ডিভাইস থেকে একটা নির্দিষ্ট সময় দূরে রাখা। এর রেজাল্ট নিয়েও হাজার হাজার গবেষণা হয়েছে। সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছেন, প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকলে স্ট্রেস কমে, ফিরে আসে মানসিক শান্তি।
এক্ষেত্রে ডিভাইস ছাড়া থাকার একটা টার্গেট সেট করা জরুরি। ধরুন প্রথমদিন ৩০ মিনিট, ধীরে ধীরে তা বাড়িয়ে একদিন করুন। ওই সময়টায় ফোন-ল্যাপটপ রেখে ব্যায়ামে মনোযোগ দিতে পারেন। এই পন্থায় না হলে স্ক্রিন টাইম নির্দিষ্ট করুন। কথায় কথায় গুগল চেক করা কমিয়ে আনুন। নির্দিষ্ট একটা সময়ে সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যবহার করুন।
সেটিংসে গিয়ে জরুরি ছাড়া অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন অফ রাখুন। অবশ্য বেশিরভাগ জরুরি বিষয়গুলো আসলে নিজেদেরই তৈরি। নোটিফিকেশন ছাড়া থাকার অভ্যাস করলে দেখা যাবে, অনেক ‘জরুরি’ কিন্তু সেগুলো আর তেমন জরুরি মনে হচ্ছে না। ডাইনিং রুম, বেডরুমকে ফোন, ল্যাপটপ বা টিভির ‘নো এন্ট্রি জোন’ করে ফেলুন। শুধু ভাচুয়াল জগতে না থেকে বাস্তবে থাকাটা একটা মানুষের জন্য বেশি জরুরি। এতে জীবনের ছোট ছোট সুন্দর মুহুর্তগুলো দেখেবন আর মিস হবে না। প্রাণ ফিরে পাবে প্রিয় সম্পর্কগুলো। আপানি ভাল থাকবেন সাথে ভাল থাকবে আপনার পাশের মানুষটিও, চলুন না চেষ্টা করে দেখি
আজ এ পর্যন্তই…সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
Device addiction
Greetings to all.
You must be watching this video on your phone or PC… Question for you: How many times do a normal person check their phone in a day? Although the exact number cannot be determined, the answer is around 100 times. But I am not saying this; the American technology company Asurion has provided this data. They also state that every person checks their phone approximately every 10 minutes. Why do people look at the phone screen so often? Is it necessary, or is it an addiction? What do you think? We will explore the answers to these questions…
Technology has become highly accessible now, with smartphones, computers, and tablets present in everyone’s home. Even the home TV is smart. You can explore the entire world with just one click. All communications, whether personal or official, are now device-dependent. Think back to two decades ago. We used the phone only to make calls or send messages. Many would say that call rates were high then, and the internet was not easily available. So its use was limited. To be honest, that is quite true.
Since the advent of the internet, our dependence on devices has increased significantly. In 2021, a Pew Research study found that 69 percent of American adults use Facebook, Instagram, and Twitter. Apart from these social media platforms, we use devices in our daily activities. That’s why you don’t stay calm when you hear the sound of WhatsApp, Messenger, or Gmail notifications. If you are two minutes late, it feels like you’ve missed out.
Is dependence on digital devices fulfilling a need or leading to addiction? Before answering this question, let’s look at some research report information. A study by the US research firm Techjury found that almost 59 percent of smartphone users check social media within 5 minutes of going to bed and 30 minutes after waking up. You could say social media is a form of communication—seeing, knowing, and commenting on what family members or friends are doing.
But if you think about it a little differently, you’ll see that while focusing more on device-based communication, you are forgetting to check in with the people closest to you. Entering the house and getting busy with the phone, not giving time to your parents, wife, and children. Forgetting to talk to the person in front of you while spending time on social media increases resentment and misunderstandings.
So much for maintaining relationships. We are getting lazier day by day due to our devices. Even though the market is within walking distance, I go to the online shop for daily necessities. This sedentary lifestyle accumulates fat in the body and increases the risk of diabetes and obesity.
Device dependence is also fueling depression among young people. A JAMA Pediatrics survey found that the more social media young people use, the more depressed they become. Many people compare themselves with the pictures or videos posted by others on social networking sites, leading to frustration and unrest, feeling like a failure.
According to the Journal of Clinical Sleep Medicine, staring at the phone or PC screen for a long time does not lead to proper sleep. Additionally, it may cause migraines and complications like loss of vision. A study on the effect of popular devices like cellphones and computers on sleep shows that the light emitted from the screen reduces the production of melatonin hormone in our bodies, disrupting sleep.
Now let’s talk about how to reduce this addiction…
There are many ways to reduce device addiction. Among them, researchers propose digital detox technology as a popular method. It can also be called a kind of practice. The essence of digital detox is to keep a person away from internet-based devices for a certain period. There have been thousands of studies on its results. Everyone agrees that staying away from technology reduces stress and brings back peace of mind.
In this case, it is essential to set a target for staying without the device. Start with 30 minutes on the first day and gradually increase it to one day. During this time, you can leave your phone and laptop and focus on exercise. Specify screen time, if not using this method. Minimize checking Google for words. Use social media at specific times.
Go to settings and turn off non-essential notifications. Most urgent matters are often self-made. If you get into the habit of going without notifications, you’ll see that many ‘urgent’ things don’t seem so urgent anymore. Make the dining room and bedroom a ‘no-entry zone’ for phones, laptops, or TVs. It is more important for a person to be in reality than just in the virtual world. You will not miss the small beautiful moments of life. Sweet relationships will come back to life. You will be fine, and so will the person next to you—let’s give it a try.
So far today, everyone stay well, stay healthy.