শুভেচ্ছা সবাইকে।
কুয়াশা ভরা শীতের সকাল। লেপের উষ্ণতা ছেড়ে উঠার কথা ভাবলেই কি আপনার শরীরে এক অদ্ভুত ক্লান্তি নেমে আসে? মনে হয়, “আর একটু… আর পাঁচ মিনিট…” কিন্তু সেই পাঁচ মিনিট গড়িয়ে কখন যে এক ঘণ্টা হয়ে যায়, টেরই পাওয়া যায় না।
কিংবা ধরুন, বিকেলের আলো যখন ম্লান হয়ে আসে, তখন কি আপনার মনের ভেতরটাও কেমন জানি মেঘলা হয়ে যায়? কোনো কারণ ছাড়াই মন খারাপ লাগে? বন্ধুরা হয়তো পিকনিকের প্ল্যান করছে, ব্যাডমিন্টন খেলছে, চারদিকে উৎসবের আমেজ অথচ আপনি ভাবছেন, ধুর! কিচ্ছু ভালো লাগছে না। আমি বরং ঘরেই থাকি। কুয়াশাচ্ছন্ন চারপাশ কি আপনার মনেও কুয়াশার ছায়া ফেলে? নিজেকে সবার থেকে গুটিয়ে নিতে ইচ্ছে করে?
যদি এই কথাগুলো আপনার সাথে মিলে যায়, তবে শুনুন, আপনি একা নন। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, এটা আপনার দোষ নয়। এটা কোনো অলসতা বা বিলাসিতাও নয়। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে “উইন্টার ব্লুজ” (Winter Blues) বা সিজনাল এফেক্টিভ ডিসঅর্ডার। সংক্ষেপে ‘স্যাড’।
নামটা বেশ অদ্ভুত, তাই না? ‘SAD’ বা দুঃখ। কিন্তু বিশ্বাস করুন, এই দুঃখের পেছনে আছে আমাদের শরীরের এক আশ্চর্য বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। আজ আমি আপনাদের শোনাবো সেই কুয়াশা আর রোদের লুকোচুরির গল্প, যা আমাদের মনের আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
চলুন, রিমির গল্পটা শুনি। রিমি ঢাকায় থাকেন, একটি ব্যস্ত অফিসে চাকরি করেন। এমনিতে তিনি ভীষণ চনমনে, কাজের ফাঁকে সহকর্মীদের সাথে হাসাহাসি করেন, সবাইকে উৎফুল্ল করে রাখেন। কিন্তু শীতকাল আসতেই তার কী যেন হয়ে যায়।
গত বছর তিনি বলছিলেন, “জানো, শীতকাল এলেই মনে হয় আমার ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গেছে। অফিসের ডেস্কে বসে থাকি, কিন্তু কাজে মন দিতে পারি না। মনে হয় মস্তিষ্কের ভেতরটা কুয়াশায় ঢেকে গেছে। আর সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো আমার শুধু মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করে। ভাপা পিঠা, খেজুরের গুড়ের পায়েশ… খেতেই থাকি, আর ওজনও বাড়তে থাকে। তারপর আয়নায় নিজেকে দেখি, আর মন আরো খারাপ হয়।”
রিমি ভাবতেন তিনি হয়তো অলস হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি জানতেন না যে, তার শরীরের ভেতর তখন এক যুদ্ধ চলছে। তার মস্তিষ্ক আলোর অভাবে ছটফট করছে। ব্যাপারটা আমরা অনেকেই জানি না। হ্যাঁ, শুধু গাছেদের খাদ্য প্রস্তুতে সূর্যের আলো লাগে এমন না, মানব মস্তিস্কও সূর্যের আলো খুঁজে বেড়ায়।
আর রিমি একা নন। একটা অবাক করা তথ্য দিই। পরিসংখ্যান বলছে, এই সমস্যায় পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪ গুণ বেশি। বিশেষ করে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী নারীরাই এর প্রধান শিকার হন। রিমি ভাবতেন তিনি হয়তো অলস হয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু তিনি জানতেন না যে, তার শরীরের ভেতর তখন এক হরমোনের যুদ্ধ চলছে। আপনার কি কখনো রিমির মতো মনে হয়েছে? যদি হয়ে থাকে, তবে পরের অংশটুকু আপনার জন্যই। আসুন খুব সহজ করে বুঝি, আমাদের শরীরের ভেতরে আসলে কী ঘটে।
আমাদের শরীরটা চলে একটা অদৃশ্য ঘড়ির নিয়মে। একে বলে ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’। এই ঘড়িটা দম পায় সূর্যের আলো থেকে। ভাবুন তো, আপনার মোবাইল ফোনে চার্জ না থাকলে যেমন সেটা স্লো হয়ে যায়, সূর্যের আলো না পেলে আমাদের শরীরও ঠিক তেমনি ‘লো ব্যাটারি’ মোডে চলে যায়।
সূর্যের আলো যখন আমাদের চোখে পড়ে, তখন আমাদের মস্তিষ্কে একটা সংকেত যায়। মস্তিষ্ক তখন ‘সেরোটোনিন’ (Serotonin) নামের এক হরমোন তৈরি করে। একে আমরা বলতে পারি ‘মন ভালো করার জাদুকর’। এই সেরোটোনিন আমাদের খুশি রাখে, চনমনে রাখে, কাজে শক্তি জোগায়।
কিন্তু শীতকালে কী হয়? দিন ছোট হয়ে যায়। তার ওপর আমাদের ঢাকা বা কলকাতার মতো শহরে সকালবেলা ঘন কুয়াশা আর ধোঁয়াশা থাকে। সূর্যের দেখা মিলতেই দুপুর গড়িয়ে যায়। আলোর এই অভাবে আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন কমে যায়। মানে, সেই ‘খুশির জাদুকর’ ছুটিতে চলে যায়।
অন্যদিকে, অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে বেড়ে যায় আরেকটা হরমোন, তার নাম ‘মেলাটোনিন’। এই মেলাটোনিন হলো আমাদের শরীরের ‘ঘুম পাড়ানি মাসিপিসি’। এর কাজ হলো আমাদের ঘুম পাড়ানো। শীতের দিনে আলোর অভাবে শরীর বুঝতেই পারে না যে সকাল হয়েছে। সে ভাবে এখনো রাত, তাই শরীরে মেলাটোনিন থেকেই যায়। ফলে সারাদিন ঝিমুনি ভাব, ক্লান্তি আর অবসাদ আমাদের ঘিরে রাখে।
সহজ কথায়, শীতকালে আপনার শরীরটা থাকে ‘জেট ল্যাগ’-এর মতো। আপনি জেগে আছেন ঠিকই, কাজ করছেন, কথা বলছেন কিন্তু আপনার ভেতরের ঘড়িটা বলছে, “এখন তো ঘুমানোর সময়!” শরীর আর মনের এই টানাটানিতেই তৈরি হয় সেই গভীর ক্লান্তি।
অনেকে ভাবেন, এসব ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা শুধু ইউরোপ বা আমেরিকার মানুষেরই হয়, যেখানে বরফ পড়ে। আমাদের দেশে তো অঢেল রোদ, আমাদের কেন হবে?
শুনলে অবাক হবেন, ২০১৮ সালে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ’-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ এবং ভারতের মতো দেশে প্রচুর মানুষ এতে আক্রান্ত হন। কেন জানেন? এর একটা বড় কারণ হলো আমাদের শহুরে জীবন আর দূষণ। ভাবুন তো, শীতকালে আমাদের শহরের আকাশ কেমন ধোঁয়াশায় ঢাকা থাকে? এই ধোঁয়াশা বা ‘স্মগ’ সূর্যের উপকারী নীল আলোকে আটকে দেয়। ফলে আমরা ট্রপিক্যাল বা গ্রীষ্মপ্রধান দেশে থেকেও পর্যাপ্ত ‘আসল’ আলো পাই না। আমরা জানালা বন্ধ করে এসির ভেতরে বা পর্দার আড়ালে থাকি। রোদ আমাদের গায়েই লাগে না।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, আমাদের দেশের মানুষের রক্তে ভিটামিন ডি-এর অভাব মারাত্মক। ভিটামিন ডি শুধু হাড়ের জন্য নয়, মনের অসুখ সারাতেও ওস্তাদ। শীতে আমরা রোদে যাই না, গায়ে চাদর মুড়ি দিয়ে থাকি, তাই এই ভিটামিনের ঘাটতি আরো বেড়ে যায়। আর তার ফলেই মন মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
আরেকটা মজার তথ্য দিই, ওই যে বলছিলাম রিমির কথা, তার শুধু পিঠা আর মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করে? এটাও কিন্তু কাকতালীয় নয়।
শীতে যে আমরা নলেন গুড়ের পিঠা বা মিষ্টি বেশি খাই, এটা আসলে আমাদের শরীর নিজেরাই চায়। শরীর যখন দেখে সেরোটোনিন কমে গেছে, তখন সে মিষ্টি জাতীয় খাবার বা কার্বোহাইড্রেট চায়। কারণ মিষ্টি খেলে সাময়িকভাবে সেরোটোনিন বাড়ে। শরীর একটু আরাম পায়। একে বলে ‘সেলফ মেডিকেশন’।
কিন্তু সমস্যা হলো, এই আরাম বেশিক্ষণ থাকে না। কিছুক্ষণ পরেই সুগার লেভেল ধপ করে নিচে নেমে যায়। একে বলে ‘সুগার ক্র্যাশ’। তখন আমরা আগের চেয়েও বেশি ক্লান্ত অনুভব করি, মেজাজ আরও খিটখিটে হয়ে যায়। তখন আবার মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করে। এভাবেই একটার পর একটা পিঠা খেয়ে আমরা ওজন বাড়াই, আর মনের দিক থেকে আরও দুর্বল হয়ে পড়ি।
শীতকাল প্রায়শই এক ধরনের দুঃসময়েরই অনুভূতি নিয়ে আসে। Guns N’ Roses-এর ‘November Rain’ গানের কথাই ধরুন “Nothing lasts forever, even cold November rain.” এখানেও তো নভেম্বরের শীত ও বৃষ্টিকে একটা দুঃসময়ের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে, আর সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যে এই ঠাণ্ডা, এবং দুঃখও চিরস্থায়ী নয়।
রবীন্দ্রনাথও তো তাঁর গানে লিখেছেন, “মেঘের কোলে রোদ হেসেছে…” তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, মেঘ কেটে সূর্যোদয়ের মতোই মনও আবার উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। আমাদের সাহিত্য, আমাদের গান সবখানেই শীতের বিষণ্ণতা আর বসন্তের উদ্ভাসের কথা ফুটে উঠেছে।
সবমিলিয়ে, আপনি এই ঋতুতে যাকে অবসাদ বা ক্লান্তি বলে মনে করছেন, তা নতুন বা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আপনি একা নন। তাই এমন অনুভূতির জন্য নিজেকে দোষী ভাবার বা অপরাধ বোধে ভোগার কোনো প্রয়োজন নেই। যুগের পর যুগ মানুষ ঋতুচক্রের সঙ্গে তার মনের এই উঠানামাকেই চিনেছে, মানিয়ে নিয়েছে।
কিন্তু শীত তো আসবেই বছর ঘুরে, এই বিষণ্ণতা বা অবসাদ থেকে বাঁচার উপায়টা কী? এই শীতের বিষণ্নতাকে কি আমরা হারিয়ে দিতে পারি? অবশ্যই! খুব ছোট ছোট কিছু পরিবর্তনে, আপনি আবার সেই চনমনে ভাব ফিরে পেতে পারেন। কোনো দামী ওষুধের দরকার নেই, শুধু নিজের রুটিনে একটু বদল আনুন।
আসুন আমরা জেনে নিই কী করা যেতে পারে এই শীতে,
প্রথমত, আলোর খোঁজ করুন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর যত দ্রুত সম্ভব দিনের আলো গায়ে মাখুন। যদি রোদ নাও থাকে, তবুও জানলার পর্দা সরিয়ে দিন, বারান্দায় গিয়ে বসুন অন্তত কয়েক মিনিট। সকাল ১০টার আগের আলো সবচেয়ে জরুরি। এই সকালের আলোই আপনার মস্তিষ্কের ঘড়িটাকে সঠিক সময়ে চলতে সাহায্য করবে, মেলাটোনিনকে বলবেন “এবার থামো, দিন শুরু হয়েছে।”
দ্বিতীয়ত, চলাফেরা করুন। শীতের সকালে লেপ ছেড়ে বেরোনো কঠিন, জানি। কিন্তু জোর করে হলেও একটু হাঁটতে বের হন। হাঁটাচলায় শরীরে ‘এন্ডরফিন’ তৈরি হয়, যা মন ভালো করার প্রাকৃতিক ওষুধ। জিমে যেতে হবে না, অন্তত ছাদে বা পার্কে একটু হাঁটুন। যদি সাথে একজন বন্ধু জুটিয়ে নিতে পারেন, তবে তো কথাই নেই! আড্ডা আর হাঁটা দুইয়ে মিলে ম্যাজিক হবে হয়তো।
তৃতীয়ত, খাবারে নজর দিন। নলেন গুড়ের পিঠা অবশ্যই খাবেন, ওটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। কিন্তু পরিমিত। মিষ্টির সাথে একটু প্রোটিন বা ফাইবার যুক্ত খাবার খান। আর খাবারের তালিকায় সামুদ্রিক মাছ, ডিম, আর কমলালেবু বা পালং শাকের মতো সবুজ ও রঙিন ফলমূল এবং সবজি রাখুন। এছাড়া মাছে থাকা ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড, যা আপনার মস্তিষ্কের তেল হিসেবে কাজ করে, মনকে সচল রাখে।
চতুর্থত, কথা বলুন। মন খারাপ হলে নিজেকে গুটিয়ে নেবেন না। পরিবারের কাউকে বা বন্ধুকে বলুন, “আপনার ভালো লাগছে না।” বিশ্বাস করুন, কথা বললে মনের ভার অর্ধেক হয়ে যায়। পিকনিকে যেতে ইচ্ছে না করলে জোর করে যাওয়ার দরকার নেই, কিন্তু একেবারে একা হয়ে যাবেন না। অন্তত ছোটখাটো আড্ডায় যোগ দিন।
এবার বলি কী করা উচিত নয়।
দুপুরে লম্বা ঘুম দেবেন না। রাতে ঘুম ভালো না হলে দুপুরে ঘুমানোর ইচ্ছে জাগে। কিন্তু দুপুরে লম্বা ঘুম দিলে আপনার রাতের ঘুম আরো নষ্ট হবে। আর আপনার বায়োলজিক্যাল ক্লক আরো এলোমেলো হয়ে যাবে। ২০ মিনিটের ছোট্ট একটা ‘পাওয়ার ন্যাপ’ নিতে পারেন, কিন্তু তার বেশি নয়।
আর হ্যাঁ, শীত লাগছে বলে দরজা-জানালা সব সময় বন্ধ করে ঘর অন্ধকার করে রাখবেন না। ঘরকে আলোকিত রাখুন। উজ্জ্বল আলো মনকেও আলোকিত করে।
মনে রাখবেন, রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন, “শীতের হাওয়ায় লাগল নাচন আমলকীর এই ডালে ডালে…”। শীত শুধু বিষণ্নতার নয়, শীত নতুন শুরুরও সময়। পাতা ঝরে যায় নতুন পাতা আসবে বলে। কুয়াশা যেমন চিরকাল থাকে না, রোদ উঠবেই, তেমনি আপনার মনের মেঘও কেটে যাবে। নিজের প্রতি একটু যত্নশীল হোন, নিজেকে একটু সময় দিন। দেখবেন, শীতের সকালে ওই এক চিলতে রোদ আপনার জীবনে কত বড় উষ্ণতা নিয়ে আসে। আর আপনি-আমি-আমরা একসাথে ভালো থাকলেই, পৃথিবীটা সুন্দর হয়ে ওঠে।
ধন্যবাদ সবাইকে,
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
Winter Blues
Greetings everyone.
Fog-filled winter morning. Just thinking of getting up leaving the warmth of the quilt, does a strange tiredness descend upon your body?
It seems, “Just a little more… just five more minutes…” but rolling over those five minutes, when one hour passes, it is not even felt.
Or suppose, when the afternoon light becomes dim, does the inside of your mind also become somewhat cloudy?
Feeling bad without any reason? Friends perhaps are planning picnics, playing badminton, all around a festive mood yet you are thinking, shoot!
Nothing feels good. I rather stay home. Does the foggy surrounding cast a shadow of fog in your mind too?
Do you wish to withdraw yourself from everyone?
If these words match with you, then listen, you are not alone.
And the biggest thing is, this is not your fault. This is not any laziness or luxury either.
In the language of science, this is called “Winter Blues” or Seasonal Affective Disorder. Briefly ‘SAD’.
The name is quite strange, isn’t it? ‘SAD’ or sadness. But believe me, behind this sadness there is a wonderful scientific explanation of our body.
Today I will tell you that story of hide-and-seek of fog and sun, which controls the weather of our mind.
Let’s go, let’s listen to Rimi’s story. Rimi lives in Dhaka, works in a busy office.
Usually she is very lively, laughs with colleagues during breaks in work, keeps everyone cheerful.
But as soon as winter comes, something happens to her.
Last year she was saying, “You know, when winter comes it seems my battery charge is finished. I sit at the office desk, but cannot pay attention to work. It seems the inside of the brain is covered in fog. And the strangest matter is I only wish to eat sweets. Steamed cakes (Vapa Pitha), date molasses rice pudding… I keep eating, and weight also keeps increasing. Then I see myself in the mirror, and the mind becomes even worse.”
Rimi used to think she is perhaps becoming lazy. But she did not know that, inside her body then a war was going on.
Her brain is struggling for lack of light. This matter many of us do not know.
Yes, not only plants need sunlight to prepare food, the human brain also searches for sunlight.
And Rimi is not alone. Let me give a surprising fact. Statistics say, in this problem compared to men, the risk of women being affected is almost 4 times higher.
Especially women aged 20 to 40 become the main victims of this.
Rimi used to think she is perhaps becoming lazy, but she did not know that, inside her body then a hormonal war was going on.
Have you ever felt like Rimi? If so, then the next part is for you.
Come let’s understand very simply, what actually happens inside our body.
Our body runs by the rule of an invisible clock. This is called ‘Biological Clock’. This clock gets power from sunlight.
Think, just as your mobile phone becomes slow if it doesn’t have charge, without getting sunlight our body also goes into ‘low battery’ mode exactly like that.
When sunlight falls on our eyes, then a signal goes to our brain.
The brain then creates a hormone named ‘Serotonin’. We can call this ‘the magician of mood improvement’.
This Serotonin keeps us happy, keeps us lively, provides energy in work.
But what happens in winter? The day becomes short. On top of that in cities like our Dhaka or Kolkata, in the morning there is thick fog and smog.
Just to see the sun noon passes by. In this lack of light Serotonin decreases in our brain.
Meaning, that ‘magician of happiness’ goes on vacation.
On the other hand, taking the opportunity of darkness another hormone increases, its name is ‘Melatonin’. This Melatonin is our body’s ‘sleep-inducing aunt’.
Its job is to put us to sleep. On winter days due to lack of light the body cannot even understand that it is morning.
It thinks it is still night, so Melatonin remains in the body. As a result all day drowsiness, tiredness and fatigue surround us.
In simple words, in winter your body stays like ‘Jet Lag’. You are awake exactly, working, talking but your inner clock is saying, “Now is time to sleep!”
In this tug-of-war of body and mind is created that deep tiredness.
Many think, these depressions or sadness happen only to people of Europe or America, where snow falls.
In our country there is abundant sun, why will it happen to us?
You will be surprised to hear, in 2018 in a research of ‘National Institute of Mental Health’ it was seen, in countries like Bangladesh and India many people are affected by this.
Do you know why? A big reason for this is our urban life and pollution.
Think, in winter how is our city sky covered in smog? This smog blocks the sun’s beneficial blue light.
As a result even staying in a tropical country we do not get sufficient ‘real’ light.
We stay inside AC closing windows or behind curtains. Sunlight does not even touch our skin.
Research further showed, in the blood of people of our country Vitamin D deficiency is severe.
Vitamin D is not only for bones, it is also expert in curing mind’s illness.
In winter we do not go in the sun, we stay wrapped in shawls, so this vitamin deficiency increases more.
And as a result mood becomes irritable.
Let me give another fun fact, that I was saying about Rimi, she only wishes to eat Pitha and sweets?
This is also not coincidental.
That we eat Nolen Gur Pitha or sweets more in winter, this actually our body itself wants.
When the body sees Serotonin has decreased, then it wants sweet foods or carbohydrates. Because eating sweets temporarily increases Serotonin.
The body gets a little relief. This is called ‘self-medication’.
But the problem is, this relief does not stay long. A while later sugar level drops down with a thud.
This is called ‘Sugar Crash’. Then we feel more tired than before, mood becomes more irritable.
Then again we wish to eat sweets. Thus eating one Pitha after another we increase weight, and become weaker from the mind’s side.
Winter often brings a feeling of a bad time. Take the case of Guns N’ Roses’ ‘November Rain’ song “Nothing lasts forever, even cold November rain.”
Here too November’s cold and rain have been shown as a symbol of hard times, and an attempt has been made to console that this cold, and sadness too is not permanent.
Rabindranath also wrote in his song, “Sunlight laughed in the lap of clouds…” He understood, just like sunrise after clouds clear, the mind also becomes bright again.
In our literature, our songs everywhere winter’s melancholy and spring’s radiance have blossomed.
Overall, what you are considering depression or tiredness in this season, that is nothing new or unusual. You are not alone.
So for such feelings there is no need to think yourself guilty or suffer from guilt.
Age after age humans have recognized this fluctuation of their mind with the cycle of seasons, have adapted.
But winter will come around the year, what is the way to escape from this melancholy or depression?
Can we defeat this winter melancholy? Of course! With very small changes, you can get back that lively feeling again.
No expensive medicine is needed, just bring a little change in your own routine.
Come let us know what can be done in this winter,
Firstly, search for light. After waking up in the morning as quickly as possible apply daylight on the body.
If there is no sun, still move the window curtain, go sit on the balcony for at least a few minutes.
The light before 10 am is most important. This morning light will help your brain’s clock to run at the right time, will tell Melatonin “Stop now, the day has started.”
Secondly, move around. Leaving the quilt in winter morning is difficult, I know. But even if forced go out to walk a little.
In walking ‘Endorphins’ are created in the body, which is natural medicine to make the mind good.
Don’t have to go to the gym, at least walk a little on the roof or in the park.
If you can gather a friend with you, then there is no question! Chatting and walking both combined maybe magic will happen.
Thirdly, pay attention to food. You must eat Nolen Gur Pitha, that is part of our culture. But moderately.
Eat a little protein or fiber-rich food with sweets. And in the food list keep sea fish, eggs, and green and colorful fruits and vegetables like oranges or spinach.
Besides Omega-3 fatty acid in fish, which works as oil for your brain, keeps the mind active.
Fourthly, speak up. If the mind is bad do not withdraw yourself. Tell someone in the family or a friend, “You are not feeling good.”
Believe me, if you speak the burden of the mind becomes half. If you don’t wish to go to a picnic no need to go by force, but do not become absolutely alone.
At least join small chats.
Now let me say what should not be done.
Do not sleep long at noon. If sleep is not good at night the desire to sleep at noon wakes up.
But if you sleep long at noon your night sleep will be spoiled more. And your biological clock will become more messy.
You can take a small ‘power nap’ of 20 minutes, but not more than that.
And yes, feeling cold so keeping doors and windows closed all the time do not keep the room dark. Keep the room illuminated.
Bright light illuminates the mind too.
Remember, as Rabindranath said, “In the winter breeze dance touched this branch to branch of Amloki…”.
Winter is not only of melancholy, winter is also time for new beginning. Leaves fall because new leaves will come.
Just as fog does not stay forever, sun will rise, similarly the cloud of your mind will also clear.
Be a little careful towards yourself, give yourself a little time. You will see, that slice of sun in the winter morning brings how big warmth in your life.
And only if you-me-we stay good together, the world becomes beautiful.
Thank you everyone,
Stay healthy, stay good.
