কোরবানির ইতিহাস কি ইব্রাহিম (আ:) থেকেই শুরু নাকি তারও আগে? আপনি কি জানেন, ইসলাম ছাড়া অন্যান্য ধর্মেও কোরবানির বিধান আছে? আর প্রতি বছর শুধু বাংলাদেশেই এক কোটির বেশি পশু কোরবানি হয়, আর্থিক মূল্যে যার দাম বিশ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
সবাইকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।
ছোটবেলা থেকেই ঈদের ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ স্পেশাল। আর সেক্ষেত্রে কোরবানির ঈদ হলে তো কথাই নেই। কিন্তু আমরা কয়জন জানি, কোথা থেকে এই কোরবানির প্রচলনটা শুরু? ইব্রাহিম (আ:) আর ইসমাইল (আ:) এর ঘটনাটা সবাই কমবেশি জানে, তবে কোরবানির ইতিহাস আরো বহু আগের, আরো বিস্তৃত। চলুন, ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদের আদ্যোপান্ত জেনে আসি। ভিডিওতে এমন কিছু জানবেন, যা আগে কখন মাথায়ও আসেনি আপনাদের।
‘ঈদুল আযহা’ শব্দটি এসেছে আরবি ‘উযহিয়্যাহ’ থেকে যার অর্থ ‘ত্যাগ’। আর ‘কোরবান’ শব্দটির উৎপত্তি হিব্রু শব্দ ‘কারবান’ থেকে, যার মানে ‘নিকটবর্তী হওয়া’। ইসলামি দৃষ্টিকোণে কোরবানি মানে শুধুমাত্র পশু জবেহ নয়, বরং আত্মত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা। কিন্তু কোরবানির এই প্রথা কি কেবল ইসলাম ধর্মেই দেখা যায়? একবার পিছনে তাকালে দেখা যাবে, বহু ধর্ম ও সভ্যতায় ত্যাগ ও উৎসর্গের নানান চিত্র।
ধর্মীয় ইতিহাস অনুযায়ী, কোরবানির সবচেয়ে পুরোনো ঘটনা হযরত আদম (আ.)-এর সময়। তাঁর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পৃথক কোরবানি দেন। হাবিলের কোরবানি কবুল হয়, কারণ তিনি তাঁর সর্বোত্তম পশুটি উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু কাবিলের কোরবানি গ্রহণ হয়নি। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে কাবিল তাঁর ভাই হাবিলকে হত্যা করেন। এটি ছিল মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে পবিত্র কুরআনের সূরা আল-মায়িদা-তে।
কোরবানির আরো একটি ঐতিহাসিক উদাহরণ দেখা যায় বনী ঈসরায়েলের বিখ্যাত হযরত ইলিয়াস (আ.)-এর জীবনে। ইসরায়েলের রাজা আহাবের স্ত্রী ইজাবেল ছিলেন পৌত্তলিক, যিনি দেবতা ‘বা’ আল’-এর উপাসনা করতেন। ইলিয়াস (আ.) তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানান এবং কারমেল পাহাড়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। এতে ইলিয়াস (আ.) সাথে ৪৫০ জন ভন্ড ধর্মীয় গুরু অংশ নেন। প্রতিযোগিতাটি ছিলো নিজ নিজ প্রভূর নামে পশু কোরবানি দেয়া। যার প্রভু সত্য, শুধু তার কোরবানি কবুল হবে। যথারীতি সবাই কোরবানি দিলো ঠিকই কিন্তু কবুল হলো শুধু ইলিয়াস (আ.) এর কোরবানি। এই ঘটনা তাওরাতের “১ম রাজাবলি” অধ্যায় ১৮-তে উল্লেখ আছে। পবিত্র কুরআনেও এই ঘটনার ইঙ্গিত রয়েছে।
খ্রিস্টান ধর্মে কোরবানির ধারণা আরও গভীর। তাদের মতে, অ্যাডামের পাপের কারণে মানবজাতি গুনাহগার হয়ে পড়ে, আর সেই পাপ মোচনের জন্য ঈশ্বর তাঁর নিজ পুত্র যীশুকে ‘পাপের কোরবানি’ হিসেবে পাঠান। যীশু ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেন মানবজাতির মুক্তির উদ্দেশ্যে। এজন্য তাঁকে বলা হয় ‘দ্বিতীয় অ্যাডাম’।
অন্যদিকে, ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কোরবানির ঘটনা হলো হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর স্বপ্ন ও তাঁর পুত্রকে কোরবানি করার সিদ্ধান্ত। আল কুরআনের সূরা আস-সাফফাতের ১০১ ও ১০২ নম্বর আয়াতে ইব্রাহিম (আ.)-এর কোরবানির ঘটনা উল্লেখ আছে। আল্লাহ তাআলা তাকে একটি পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দেন। পরে ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে দেখেন, তাকে তার ছেলেকে কোরবানি করতে বলা হচ্ছে। তিনি বুঝতে পারেন, এটি আল্লাহর নির্দেশ। বিষয়টি সন্তানের কাছে জানালে, সে বিনা দ্বিধায় আদেশ পালনের আহ্বান জানায়। এই ঘটনা ত্যাগ ও আত্মসমর্পণের এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে ইসলামি ইতিহাসে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে।
যদিও কুরআনে পুত্রের নাম স্পষ্ট করে বলা হয়নি, তবে অধিকাংশ ইসলামি স্কলার যেমন ইবনে কাসির, ইমাম তাবারি, ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণনা অনুসারে, তিনি ছিলেন হযরত ইসমাইল (আ.)। অপরদিকে, ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মমতে, সেই পুত্র ছিলেন হযরত ইসহাক (আ.)। এই ঘটনাকে তারা বলেন ‘বাইন্ডিং অফ ইসহাক বা আইজ্যাক’ (Binding of Isaac)। বিতর্ক থাকলেও ইসলামে হযরত ইসমাইল (আ.)-কেই ত্যাগের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, এবং মুসলিমরা সেই ঘটনার ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর পশু কোরবানি করেন।
এ সকল ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সবগুলোই ঘটেছে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে, তবে এই ধর্মীয় ঐতিহ্য কেবল আরব উপদ্বীপ বা মধ্যপ্রাচ্যেই আটকে নেই, পৃথিবীর নানা প্রান্তে মুসলমানেরা বিভিন্ন নামে ও রীতিতে ঈদুল আযহা পালন করে আসছেন।
ঢাকা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত কোরবানির পশুর হাট যেন এক উৎসবমুখর মেলায় পরিণত হয়। কেউ গরু দেখে, কেউ দরদাম করে, কেউবা শুধু আনন্দ করতেই হাটে আসে। পশু কেনাবেচার মধ্যেই উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে দেশের প্রতিটি শহর ও গ্রামের অলি-গলিতে। সারা দেশে পশুর হাট বসে, লেনদেন হয় হাজার কোটি টাকার। বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয় তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ১ কোটিরও বেশি পশু কোরবানি হয়, যার আর্থিক মূল্য ২০,০০০ কোটি টাকারও উপরে।
ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের সাথে ত্যাগের বিষয়টা জড়িয়ে আছে। আর এ কারণেই ইসলামের বিধান অনুযায়ী সামর্থ্যবানরা কোরবানির মাংসের একটা অংশ গরিবের মাঝে বিলিয়ে দেন। এতে করে গরিবদের আমিষের অভাবটাও পূরণ হয়। যদিও বাংলাদেশ এখন অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ, কিন্তু এখনো প্রোটিনের ঘাটতি এক বাস্তব সমস্যা, বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে। কোরবানির ঈদে প্রাপ্ত মাংসই তাদের প্রোটিন চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করে থাকে। মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসছে, একদিনের কোরবানিতে কি বছরের প্রোটিন ঘাটতি পূরণ সম্ভব? উত্তরটা আংশিকভাবে ‘হ্যাঁ’। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ দীর্ঘদিন ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করে রাখে। যাতে প্রয়োজনের সময় রান্না করতে পারে। মাংস সংরক্ষণের প্রচলন কিন্তু মানুষের মাঝে আগেও ছিলো। বলছি যখন ফ্রিজ ছিলো না – তখনকার কথা। সেসময় মানুষ মাংস শুকিয়ে রাখতো, যাতে নষ্ট না হয়। পরে প্রয়োজনের সময় সেই শুকনো মাংস বের করে রান্না করতো। সেদিক থেকে চিন্তা করলে মোটামুটি কোরবানির ঈদের মাংস আমাদের আমিষের বিশাল একটা চাহিদা পূরণ করে চলছে। তাছাড়া, গরু ও খাসির মাংসের উচ্চমূল্যের কারণে কোরবানির ঈদই অনেক দরিদ্র মানুষের জন্য বছরের একমাত্র মাংস খাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে। এই দিক থেকে কোরবানি শুধু ধর্মীয় নয়, পুষ্টিগত দিক থেকেও অপরিসীম তাৎপর্যপূর্ণ।
কোরবানির ঈদে আরেকটি বিরাট অর্থনৈতিক লেনদেন হয় পশুর চামড়াকে ঘিরে। ইসলাম ধর্মমতে, চামড়া বিক্রির টাকা গরীব-দুঃখীদের দেয়ার নিয়ম। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব বলছে, ২০২৪ সালের ঈদে শুধু কোরবানির পশু চামড়া কিনতেই দেড় হাজার কোটি টাকা বাজেট ছিল।
কুরবানীর পশুর চামড়ার এই বাণিজ্যিকিকরণের সাথে জড়িয়ে আছে এতিমখানা মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো – ব্যানবেইসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে মাদ্রাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৪ জন। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উপকৃত হচ্ছেন বিশাল এই জনগোষ্ঠি।
ইদুল আযহায় মুসলিম বিশ্ব যেভাবে কোরবানির ত্যাগ নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে, এর কিন্তু একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। গবেষণা বলছে, কোরবানির সময় মানব মস্তিষ্কে ‘অক্সিটোসিন’ নামক হরমোন নিঃসরণ হয়, যা সুখানুভূতি তৈরি করে। নিউরো-সায়েন্টিস্ট ডা. পল জ্যাকের মতে, গরিবদের মাংস বিতরণ বা পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করার সময় মস্তিষ্কের ‘ভেন্ট্রাল স্ট্রিয়াটাম’ অ্যাক্টিভ হয়—যা ডোপামিন নিঃসরণ করে। এজন্যই ঈদের দিনে ত্যাগের পর আমরা ‘অস্বাভাবিক প্রশান্তি’ পাই।
এখানেই শেষ নয়। ঈদুল আযহা একটি বৃহৎ সামাজিক বার্তা বহন করে- সমতা, মানবতা, এবং দানশীলতার শিক্ষা। কোরবানির মাংস তিনভাগে বিভক্ত করার বিধান—নিজেদের জন্য, আত্মীয়দের জন্য এবং গরিবদের জন্য—এটি সমাজে সম্পদের সুষম বণ্টনের অনুশীলনও।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঈদ পালনের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির বিস্তারিত জানতে দেখে আসতে পারেন এই ভিডিওটি। আর ঈদ ছাড়াও পৃথিবীর নানা প্রান্তে নানা রংঢঙ্গের উৎসব সারা বছর জুড়েই লেগে থাকে, যেমন, চীনের নববর্ষ কিংবা থাইল্যান্ডের জল উৎসব। কোন উৎসব নিয়ে পরবর্তী ভিডিওটি চান, জানিয়ে দিন আমাদেরকে কমেন্টে।
সবশেষে, ঈদুল আযহার সবচেয়ে গভীর শিক্ষা হলো—ত্যাগ কেবল পশুর নয়, বরং নিজের আত্মার। হযরত ইব্রাহিম (আ.) আমাদের দেখিয়েছেন—আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের প্রিয়তম সম্পদও উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকতে হয়। আজকের এই আধুনিক যুগেও, এই উৎসব আমাদের মনে করিয়ে দেয়—মানবতা, ভ্রাতৃত্ব, এবং আত্মনিয়ন্ত্রণই হলো প্রকৃত ধর্ম।
ঈদে শুধু পশু কোরবানি নয়, আমরা ত্যাগ করি আমাদের অহংকার, হিংসা ও বিভেদের দেয়াল। ঈদ হোক আত্মত্যাগের উপলক্ষ, আর সামাজিক সম্প্রীতির সেতুবন্ধন।
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
Eid-ul-Azha
Did the history of Qurbani start with Ibrahim (A.S.), or even before that? Did you know that apart from Islam, other religions also have the provision of sacrifice? And every year in Bangladesh alone, more than one crore animals are sacrificed, with a financial value exceeding 20,000 crore taka.
Wishing everyone a blessed Eid-ul-Azha. Eid Mubarak.
Since childhood, Eid has always felt special to me. And when it’s Qurbani Eid, there’s no comparison. But how many of us know where this tradition of Qurbani started? Most people know about the story of Ibrahim (A.S.) and Ismail (A.S.), but the history of Qurbani is much older and more extensive. Come, let’s discover the ins and outs of Eid-ul-Azha or Qurbani Eid. You’ll learn things in this video you’ve probably never even thought of before.
The word ‘Eid-ul-Azha’ comes from the Arabic ‘Udhiyyah’, which means ‘sacrifice’. And the word ‘Qurbani’ originates from the Hebrew word ‘Karban’, meaning ‘to come closer’. From the Islamic perspective, Qurbani is not just about slaughtering an animal, but rather striving to attain closeness to Allah through sacrifice. But is this tradition of Qurbani seen only in Islam? Looking back, you’ll find various forms of sacrifice and offering across many religions and civilizations.
According to religious history, the earliest event of Qurbani was during the time of Prophet Adam (A.S.). His two sons, Habil and Qabil, each offered a sacrifice to please Allah. Habil’s Qurbani was accepted because he offered his best animal. But Qabil’s offering was not accepted. Envious, Qabil killed his brother Habil. This was the first murder in human history. This event is mentioned in the Holy Quran, Surah Al-Ma’ida.
Another historic example of Qurbani is found in the life of the famous Prophet Elias (A.S.) of Bani Israel. The king of Israel’s wife, Jezebel, was a pagan who worshipped the deity ‘Baal’. Elias (A.S.) challenged her and arranged a competition on Mount Carmel. Elias (A.S.) and 450 false religious leaders took part. The contest was to sacrifice animals in the name of their respective gods. The god whose sacrifice was accepted would be proven true. As expected, everyone made offerings, but only Elias’s (A.S.) sacrifice was accepted. This event is mentioned in the Torah’s “1 Kings” chapter 18. The Holy Quran also alludes to this incident.
In Christianity, the concept of sacrifice is even deeper. According to them, due to Adam’s sin, mankind became sinful, and to redeem this sin, God sent His own son, Jesus, as the ‘sacrifice for sin’. Jesus died on the cross to save mankind. That’s why he is called the ‘Second Adam’.
On the other hand, in Islam, the most significant sacrifice event is the dream of Prophet Ibrahim (A.S.) and his decision to sacrifice his son. In the Quran, Surah As-Saffat, verses 101 and 102 mention Ibrahim’s (A.S.) Qurbani. Allah gave him the good news of a son. Later, Ibrahim (A.S.) saw in a dream that he was being told to sacrifice his son. He understood that this was a command from Allah. When he informed his son, the son, without hesitation, agreed to follow the command. This incident stands as a unique example of sacrifice and submission in Islamic history.
Although the Quran does not explicitly mention the name of the son, most Islamic scholars like Ibn Kathir, Imam Tabari, and Ibn Abbas (R.A.) state that he was Prophet Ismail (A.S.). However, in Judaism and Christianity, the son is believed to be Prophet Ishaq (A.S.). They call the event the ‘Binding of Isaac’. Despite the debate, in Islam, Prophet Ismail (A.S.) is considered the symbol of sacrifice, and Muslims continue the tradition each year by sacrificing animals.
Analyzing all these events, it appears they all took place in Arab countries of the Middle East, but this religious tradition is not confined only to the Arabian Peninsula or the Middle East—Muslims around the world observe Eid-ul-Azha in various names and customs.
From Dhaka to the remotest regions of Bangladesh, cattle markets during Qurbani Eid turn into festive fairs. Some come to check out cows, some to bargain, others just to enjoy. The festive mood spreads across every alley and village in the country through the buying and selling of animals. Cattle markets pop up across the country, with transactions amounting to thousands of crores. According to the Ministry of Agriculture, every year over 1 crore animals are sacrificed, with a monetary value exceeding 20,000 crore taka.
The essence of Eid-ul-Azha or Qurbani Eid is tied to sacrifice. That’s why, as per Islamic law, the affluent distribute a portion of the meat to the poor. This helps fulfill the protein deficiency of the underprivileged.
Though Bangladesh is now mostly self-sufficient, protein deficiency is still a real issue, especially among the poor and marginalized communities. The meat from Qurbani during Eid covers a significant part of their protein requirement. You may wonder, can the protein gap of the whole year be filled with just one day’s Qurbani? The answer is: partially, yes. Nowadays, most people store meat in the freezer for an extended period so they can cook it when needed. But the practice of storing meat existed even before the freezer. Back then, people used to dry meat to prevent spoilage and cooked it later when needed. From this perspective, Qurbani meat during Eid continues to meet a large portion of our protein needs. Moreover, due to the high cost of beef and mutton, Eid-ul-Azha becomes the only chance in the year for many poor people to eat meat. In this regard, Qurbani is not just a religious practice—it holds immense nutritional significance.
Another massive economic transaction during Qurbani Eid revolves around animal skins. According to Islamic law, the money from selling skins must be given to the poor and needy. According to the Bangladesh Tanners Association, during the 2024 Eid alone, a budget of 1,500 crore taka was allocated just for purchasing Qurbani animal skins.
The commercialization of Qurbani animal skins is connected with the education of orphanage, madrasa, and boarding students. According to BANBEIS (Bangladesh Bureau of Educational Information and Statistics), in 2023, there were 2,758,504 madrasa students in the country. This huge population benefits from the economic activities surrounding Eid-ul-Azha.
The way the Muslim world celebrates Eid-ul-Azha with joy and sacrifice actually has a scientific explanation. Research shows that during Qurbani, the human brain releases a hormone called ‘oxytocin’, which creates a feeling of happiness. According to neuroscientist Dr. Paul Zak, during the distribution of meat to the poor or sharing it with family, the brain’s ‘ventral striatum’ activates—releasing dopamine. That’s why we feel an ‘unusual peace’ after the act of sacrifice on Eid day.
This isn’t the end. Eid-ul-Azha carries a profound social message—teaching equality, humanity, and generosity. The rule of dividing Qurbani meat into three parts—for oneself, for relatives, and for the poor—is also a practice of equitable distribution of wealth in society.
To learn more about the different cultural ways Eid is celebrated around the world, watch this video.
And aside from Eid, colorful festivals happen all year round in different parts of the world—like China’s New Year or Thailand’s water festival. Let us know in the comments which festival you’d like our next video to cover.
Finally, the deepest lesson of Eid-ul-Azha is—sacrifice is not just about the animal, but of the soul. Prophet Ibrahim (A.S.) showed us that one must be ready to sacrifice even the dearest possessions to please Allah. Even in today’s modern age, this festival reminds us that humanity, brotherhood, and self-restraint are the true essence of religion.
On Eid, it’s not just the animals we sacrifice—we give up our pride, jealousy, and walls of division. Let Eid be an occasion of self-sacrifice and a bridge of social harmony.
Wishing everyone a blessed Eid. Stay well, stay happy.
