শুভেচ্ছা সবাইকে।
রাতে ঘুমানোর আগে আপনার বেডরুমের দরজাটা কি লক করেছেন? সকালে উঠে অফিসে যাওয়ার আগে বিশ্বাস করে যাকে ঘরের চাবিটা দিচ্ছেন, আপনি কি নিশ্চিত তিনি আপনার ঘরের শত্রু নন? যার কাছে বাচ্চার দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছেন, তার কাছে কি সত্যি আপনার বাচ্চা নিরাপদ? নাকি আপনি নিজের অজান্তেই ড্রয়িংরুমে পুষছেন এক ভয়াবহ ‘টাইমবোমা’?
ঘটনাটা ঘটে মোহাম্মদপুরের একটি সুরক্ষিত ফ্ল্যাটে। একদম দিনের আলোতে। লায়লা আফরোজ এবং তার মেয়ে নাফিসা। মা আর মেয়ে নিজেদের বাসায়ই খুন হলেন। টিভি আর সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর দেখে আমরা সবাই শিউরে উঠেছি, নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছি।
সারাদিন বাইরে থাকলেও দিন শেষে মানুষ নিজ বাসায় ফিরে আসে, কারণ এখানেই মানুষ সবচেয়ে নিরাপদ বোধ করে। অথচ এখানেই ঘটলো এমন ভয়াবহ একটা ঘটনা। প্যাথেটিক, তাই না?
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কাজ শেষ করে একজন নারী গেট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তার হাঁটাচলায় কোনো ভয় নেই, নেই কোনো তাড়াহুড়ো, নেই কোনো আড়ষ্টতা। অদ্ভুত শান্ত। বাসার গার্ডদের বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। অবশেষে গৃহকর্মী আয়েশাও ধরা পড়েছেন ঝালকাঠি থেকে।
কিন্তু পুলিশ যখন ফুটেজটা জুম করে দেখল, তখন বেরিয়ে এলো একটি চমকপ্রদ তথ্য। যিনি বের হচ্ছেন, তিনি আসলে তার নিজের কাপড় পরেছিলেন না। তিনি পরেছিলেন নিহত লায়লা আফরোজের মেয়ে নাফিসার স্কুল ড্রেস। অবশ্য নিজের মুখ ঢেকে রেখেছিলেন। পুলিশ বলছে এর প্রধান কারণ ছিল গেটের দারোয়ানকে ফাঁকি দেয়া। সংবাদপত্র আর টিভি চ্যানেলের বদৌলতে আপনারা এসব আগেই জানেন, আমরা নজর দেবো ঘটনার পেছনের বিশ্লেষণে।
গভীর মনস্তাত্ত্বিক দিকটাতেই খুঁটিয়ে দেখবো আমরা। চমকে ওঠার মতো কিছু ফ্যাক্ট নিয়ে আসবো সবার সামনে।
যে কথা বলছিলাম, খুনী ভুক্তভোগীর কাপড় পরেই বের হলেন। একে অপরাধবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘আইডেন্টিটি এনভি’ বা পরিচয় ঈর্ষা। আপনারা হয়তো অস্কারজয়ী কোরিয়ান সিনেমা ‘প্যারাসাইট’ দেখেছেন। সেখানে দরিদ্র কিম পরিবার কিন্তু ধনী পার্ক পরিবারকে ঘৃণা করত না। তারা আসলে পার্ক পরিবারের মতো হতে চেয়েছিল। তারা ধনীদের জীবনটা নকল করতে চেয়েছিল।
মোহাম্মদপুরের এই সন্দেহভাজন গৃহকর্মীও ঠিক একই কাজ করেছেন। তিনি কেবল হত্যা করেই থামেননি। তিনি কিছুক্ষণের জন্য হলেও তার গৃহকর্ত্রীর সন্তানের পোশাক গায়ে জড়িয়ে, তার পরিচয়টা নিজের করে নিতে চেয়েছিলেন। এ ঘটনার একটি মনস্তাত্ত্বিক কারণও আছে।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলেন, মানুষ বিল গেটসকে হিংসা করে না। মানুষ হিংসা করে তাকেই, যে তার খুব কাছে থাকে কিন্তু তার চেয়ে একটু ভালো খায়, ভালো পরে। একজন গৃহকর্মীর কাছে তার মনিবই হলেন সেই কাছের মানুষ। যার জীবনটা সে প্রতিদিন দেখে, কিন্তু ছুঁতে পারে না। নাফিসার পোশাক পরাটা ছিল সেই অধরা জীবনকে ছুঁয়ে দেখার এক বিকৃত ও অপরাধমূলক চেষ্টা।
ফরেনসিক রিপোর্টে আরও একটি ভয়াবহ তথ্য পাওয়া গেছে। মা ও মেয়ের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। একে বলা হয় ‘ওভারকিল’। মানুষ মারার জন্য যতগুলো আঘাতের প্রয়োজন, খুনী তার চেয়ে অনেক বেশি আঘাত করেছেন। কিন্তু কেন এই আক্রোশ?
অনেকে হয়তো বলবেন দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ থেকে এমনটা হতে পারে। কিন্তু মনে রাখবেন, তুচ্ছ কারণে অপমান বা বকাঝকা—কোনোটাই ঠান্ডা মাথায় দুটি মানুষকে খুন করার কারণ হতে পারে না। খুনী এখানে শুধু চুরি করতে আসেননি, তিনি তাদের অস্তিত্ব মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। যেই মেয়েটি তাকে বিশ্বাস করে দরজা খুলে দিল, তাকেই তিনি নির্মমভাবে আঘাত করলেন। একে কোনোভাবেই ‘সাধারণ ক্ষোভ’ বলা যায় না, এটি চরম ধরণের বিশ্বাসঘাতকতা।
গ্রিক মিথলজির ‘ট্রোজান হর্স’ বা ট্রয়ের ঘোড়ার গল্পটা মনে আছে? শত্রুরা বিশাল এক কাঠের ঘোড়ার পেটের ভেতর লুকিয়ে শহরের ভেতরে ঢুকেছিল। মোহাম্মদপুরের এই ঘটনায় গৃহকর্মী নিজেই ছিলেন সেই ‘হিউম্যান ট্রোজান হর্স’। আমরা নিরাপত্তার জন্য ফ্ল্যাটের মেইন গেটে দারোয়ান রাখি, সিসিটিভি লাগাই। বাইরের জগত থেকে বাঁচার জন্য দরজা লক করি। কিন্তু অদ্ভুত প্যারাডক্স হচ্ছে, দরজা বন্ধ করার সময় আমরা বাইরের একজন মানুষকে, মানে গৃহকর্মীকে – আমাদের সবচেয়ে ব্যক্তিগত গণ্ডির ভেতরে আটকে ফেলি। যাকে আমরা বিশ্বাস করলাম, ঘরের চাবি দিলাম, সেই মানুষটাই যখন ভেতর থেকে আঘাত করে, তখন বাঁচার আর কোনো উপায় থাকে না। একেই বলা হয় ‘ইন্টিমেট বিট্রেয়াল’ বা ঘনিষ্ঠ বিশ্বাসঘাতকতা।
চলুন, এবার মুদ্রার উল্টোদিকও দেখা যাক। ২০১৩ সালের আদুরি কিংবা ২০১৫ সালের হ্যাপির ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা আমরা ভুলিনি। সেই ঘটনাগুলো অবশ্যই নিন্দনীয় এবং সেসবের বিচার হওয়াও জরুরি। ব্র্যাক এবং ওকুপ (OKUP)-এর তথ্য অনুযায়ী, বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের ৬১ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। সৌদি আরবের ‘কাফালা’ সিস্টেমের কথা বলতে পারি। এটি আসলে আধুনিক দাসপ্রথা ছাড়া আর কিছুই নয়। সেখানে পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়, মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। এগুলো কোনোভাবেই মানবিক কোনো আচরণ নয়, সন্দেহ নেই।
অনেকে হয়তো আবেগের বশবর্তী হয়ে এই ঘটনাকে অতীতের কোনো নির্যাতনের ‘পাল্টা জবাব’ হিসেবে দেখতে চাইবেন।
কিন্তু সাবধান! মোহাম্মদপুরের এই ঘটনাকে ওইসব ঘটনার সাথে গুলিয়ে ফেললে হবে না। এখানে কোনো নির্যাতনের ইতিহাস নেই, কোনো বঞ্চনার গল্প নেই। এখানে অপরাধী কোনো ‘শোষিত বিপ্লবী’ নন, যিনি সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়ছেন। তিনি কেবল আমাদের অন্ধ বিশ্বাস আর অলসতার সুযোগ নিয়েছেন। নিজের লোভকে রূপ দিয়েছে এক ভয়াবহ অপরাধে।
আদুরি বা হ্যাপি হয়তো ভুক্তভোগী ছিলেন, কিন্তু মোহাম্মদপুরের আয়েশা ভুক্তভোগী নন। তিনি একজন ঠান্ডা মাথার খুনী। দারিদ্র্য বা অতীত কষ্টের দোহাই দিয়ে এই জঘন্য অপরাধকে ‘গ্লোরিফাই’ করার বা সহানুভূতি দেখানোর বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। বরং এই ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে—অন্যের ওপর এই অন্ধ নির্ভরতা আসলে কতটা বিপজ্জনক। আমরা সরল মনে যাকে ঘরের চাবি দিচ্ছি, আমরা কি জানি তার মনে কী চলছে? অন্যের ওপর নির্ভর করতে গিয়ে আমরা আসলে নিজেদের নিরাপত্তা তুলে দিচ্ছি সম্পূর্ণ অপরিচিত একজন মানুষের হাতে।
শেষ করার আগে, আবার সেই প্রথম প্রশ্নে ফিরে যাই। আমরা গৃহকর্মীদের আদর করে ‘খালা’, ‘বুয়া’ বা ‘আপা’ ডাকি। সমাজবিজ্ঞানীরা একে বলেন ‘ফিক্টিভ কিনশিপ’ (Fictive Kinship) বা কৃত্রিম আত্মীয়তা। আমরা ভাবি, আত্মীয় বানালে হয়তো তারা কম টাকায় বেশি কাজ করবে, একইসাথে বিশ্বস্ত থাকবে। কিন্তু মোহাম্মদপুরের ঘটনা প্রমাণ দিল, অন্ধ আবেগের দিন শেষ হয়ে গেছে। আজকের গৃহকর্মীরা অতীতের মতো অন্ধ অনুগত নন। মানুষ হিসেবে তাদের যেমন অধিকার আছে, তেমনি তাদের ভেতর লুকিয়ে থাকতে পারে ভয়ংকর কোনো অপরাধী সত্তা।
মোহাম্মদপুরের ঘটনাটি কোনো সাধারণ ক্রাইম নয়। এটি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আমাদের তথাকথিত ‘নিরাপদ বাসা’ বা ‘সেফ জোন’ আসলে কতটা নাজুক। আজকের গল্পটা কেবল খুনের নয়। এই গল্পটা বিশ্বাস, বিশ্বাসঘাতকতা এবং আমাদের সমাজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা এক গভীর অসুখের।
তাই আজ রাতে দরজা বন্ধ করার সময় নিজেকে প্রশ্ন করুন। আমাদের ড্রয়িংরুমে, আমাদের রান্নাঘরে অজান্তেই কোনো ‘টাইমবোমা’ তৈরি করছি না তো আমরা? মোহাম্মদপুরের এই রক্তস্নাত মেঝে আমাদের একটি কঠিন বার্তা দিয়ে গেল— দারিদ্র্য বা বঞ্চনা মানুষের জীবনে থাকতেই পারে, কিন্তু সেটা কখনোই কাউকে খুন করার অধিকার দেয় না।
আমরা যদি এখনই সচেতন না হই, ট্রোজান হর্স বারবার ফিরে আসবে, ভিন্ন কোনো নামে, ভিন্ন কোনো ফ্ল্যাটে।
তাই সাবধান হওয়ার এখনই সময়। গৃহকর্মী, দারোয়ান বা ড্রাইভার নিয়োগের আগে অবশ্যই ভালোভাবে খোঁজ নিন। তাদের ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা রাখুন। পুলিশ বা স্থানীয় থানার সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন।
তবে, সবচেয়ে বড় সমাধানটি আসলে আমাদের নিজেদের হাতেই। আমাদের এই ‘পরনির্ভরশীলতা’র সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। উন্নত বিশ্বের দিকে তাকান। পরিসংখ্যান বলছে, আমেরিকা বা ইউরোপের মতো দেশগুলোতে ৯৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ নিজেদের ঘরের কাজ নিজেরাই করেন। সেখানে বিলিওনিয়াররাও নিজের গাড়ি নিজে ড্রাইভ করেন, নিজের কফি নিজে বানিয়ে খান। সেখানে ‘কাজের লোক’ বিলাসিতা, আর আমাদের দেশে এটা হলো নিত্যপ্রয়োজন।
আমাদের এই মানসিকতা আসলে আধুনিক দাসপ্রথারই নামান্তর। আমরা নিজের অজান্তেই নিজেদের হাত-পা অচল করে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। আর এই সুযোগটাই নিচ্ছে অপরাধীরা। এ থেকে বাঁচতে আত্মনির্ভরশীলতার কোনো বিকল্প নেই।
আপনার সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই শেখান—নিজের পানির গ্লাসটা নিজেকেই ধুতে হবে, নিজের বিছানা নিজেকেই গোছাতে হবে। তাকে ‘রাজা-বাদশাহ’ হিসেবে বড় না করে, স্বাবলম্বী হিসেবে মানুষ করে তুলুন। যেই জাতি নিজের জুতার ফিতা বাঁধতে অন্যের সাহায্য লাগে, সেই জাতি নিজের নিরাপত্তা দেবে কীভাবে?
মনে রাখবেন, যখন আপনি নিজের কাজ নিজে করবেন, তখন আপনার গোপনীয়তা বজায় থাকবে, বাইরের মানুষের আনাগোনা কমবে এবং আপনার পরিবার থাকবে সবচেয়ে নিরাপদ। তাই দাসপ্রথার মতো মানুষ পোষার অভ্যাস বাদ দিয়ে, স্বাবলম্বী হওয়ার চর্চা শুরু করুন আজ থেকেই। আর ব্যক্তিগত সতর্কতাই যথেষ্ট নয়। আমাদের সমাজের ভিতটাও মজবুত করতে হবে। যাতে দারিদ্র্য কখনও কারও প্রতি অবিচার বা বৈষম্যের কারণ না হয়। প্রতিটি মানুষের ন্যূনতম মানবিক অধিকার যেন সুরক্ষিত থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।
ধন্যবাদ সবাইকে।
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
অ্যান্ড মোস্ট ইম্পর্ট্যান্টলি, নিরাপদে থাকুন।
Trojan Horse
Greetings to everyone.
Before sleeping at night, did you lock your bedroom door? Before waking up in the morning and going to the office, the person to whom you are giving the house key with trust, are you sure he/she is not the enemy of your house? The one to whom you are leaving the responsibility of your child, is your child truly safe with them? Or are you unknowingly nurturing a terrible ‘time bomb’ in the drawing room?
The incident happened in a secured flat in Mohammadpur. Exactly in broad daylight. Laila Afroz and her daughter Nafisa. Mother and daughter were murdered in their own home. Seeing this news on TV and social media, we all shuddered, and started thinking anew about our own safety.
Even if staying outside all day, at the end of the day people return to their own home, because here people feel safest. Yet right here happened such a terrible incident. Pathetic, isn’t it?
In the CCTV footage it is seen, finishing work a woman is going out through the gate. In her walk there is no fear, there is no hurry, there is no hesitation. Strangely calm. The house guards had not the slightest room for suspicion. Finally, domestic worker Ayesha was also caught from Jhalakathi.
But when the police zoomed in and watched the footage, then came out a startling piece of information. The one who is exiting, she was actually not wearing her own clothes. She was wearing murdered Laila Afroz’s daughter Nafisa’s school dress. Of course, she kept her own face covered. Police say the main reason for this was to deceive the gate’s guard. Thanks to newspapers and TV channels you know all this already, we will focus on the analysis behind the incident.
We will scrutinize the deep psychological aspect. We will bring some shocking facts in front of everyone.
As I was saying, the killer went out wearing the victim’s clothes. In the language of criminology, this is called ‘Identity Envy’ or identity jealousy. You perhaps have seen the Oscar-winning Korean movie ‘Parasite’. There the poor Kim family did not hate the rich Park family. They actually wanted to be like the Park family. They wanted to copy the life of the rich.
This suspected domestic worker of Mohammadpur also did exactly the same thing. She did not stop only at killing. Even if for a short while, wrapping her mistress’s child’s dress on her body, she wanted to make her identity her own. There is a psychological reason for this incident too.
Sociologists say, people do not envy Bill Gates. People envy him only, who stays very close to them but eats a little better, wears better than them. To a domestic worker, her employer is that close person. Whose life she sees every day, but cannot touch. Wearing Nafisa’s dress was a perverted and criminal attempt to touch that elusive life.
In the forensic report, another terrible piece of information was found. On the bodies of mother and daughter, there were signs of numerous injuries. This is called ‘Overkill’. As many blows are needed to kill a human, the killer struck many more than that. But why this rage?
Many might say that such a thing can happen from long-accumulated anger. But remember, insults or scolding for trivial reasons—none can be the reason for killing two people in cold blood. The killer did not come here only to steal, she wanted to erase their existence. The girl who trusted her and opened the door, her she struck brutally. This can in no way be called ‘ordinary anger’, this is an extreme type of betrayal.
Do you remember the story of Greek Mythology’s ‘Trojan Horse’ or the horse of Troy? Enemies hid inside the belly of a huge wooden horse and entered inside the city. In this incident of Mohammadpur, the domestic worker herself was that ‘Human Trojan Horse’. We keep guards at the flat’s main gate for security, install CCTV. We lock the door to save ourselves from the outside world. But the strange paradox is, while closing the door we lock an outside person, meaning the domestic worker – inside our most personal sphere. Whom we trusted, gave the house key, when that person strikes from inside, then there remains no way to survive. This is what is called ‘Intimate Betrayal’.
Let’s go, now let’s see the other side of the coin too. We have not forgotten the torture inflicted on Aduri in 2013 or Happy in 2015. Those incidents are certainly condemnable and their trial is also urgent. According to BRAC and OKUP data, 61 percent of female workers returning from abroad become victims of physical torture. I can speak of Saudi Arabia’s ‘Kafala’ system. This is actually nothing but modern slavery. There passports are snatched away, mobile phones are not allowed to be used. These are in no way humane behavior, there is no doubt.
Many might, being swayed by emotion, want to view this incident as a ‘counter response’ to some past torture.
But beware! One must not confuse this incident of Mohammadpur with those incidents. Here there is no history of torture, no story of deprivation. Here the criminal is no ‘oppressed revolutionary’, who is fighting against the system. She only took advantage of our blind trust and laziness. Gave her own greed the shape of a terrible crime.
Aduri or Happy might have been victims, but Mohammadpur’s Ayesha is not a victim. She is a cold-blooded killer. Giving the excuse of poverty or past suffering, there is not a single opportunity to ‘glorify’ or show sympathy to this heinous crime. Rather this incident is showing us by pointing a finger at our eye—how dangerous this blind dependence on others actually is. We with a simple mind to whom we are giving the house key, do we know what is going on in her mind? While going to depend on others, we are actually handing over our own safety into the hands of a completely unknown human.
Before finishing, let’s go back to that first question again. We fondly call domestic workers ‘Khala’, ‘Bua’ or ‘Apa’. Sociologists call this ‘Fictive Kinship’ (Fictive Kinship) or artificial kinship. We think, if made a relative perhaps they will do more work for less money, at the same time will remain faithful. But the incident of Mohammadpur gave proof, the days of blind emotion are over. Today’s domestic workers are not blindly loyal like the past. Just as they have rights as humans, similarly inside them can be hidden some terrible criminal entity.
The incident of Mohammadpur is no ordinary crime. It has shown us by pointing a finger at our eye, how fragile our so-called ‘safe home’ or ‘safe zone’ actually is. Today’s story is not only of murder. This story is of trust, betrayal and a deep disease hidden inside our society.
So tonight, while closing the door ask yourself. In our drawing room, in our kitchen, are we not unknowingly creating a ‘time bomb’? The blood-bathed floor of Mohammadpur left us a hard message—poverty or deprivation can exist in human life, but that never gives anyone the right to kill.
If we do not become aware right now, the Trojan Horse will return again and again, in a different name, in a different flat.
So now is the time to be careful. Before appointing a domestic worker, guard or driver, definitely inquire well. Keep an idea about their history. You can also contact the police or local police station.
However, the biggest solution is actually in our own hands. We have to come out of this culture of ‘dependency’. Look at the developed world. Statistics say, in countries like America or Europe more than 95 percent of people do their own housework themselves. There billionaires also drive their own cars, make and drink their own coffee. There ‘domestic help’ is a luxury, and in our country, this is a daily necessity.
This mentality of ours is actually another name for modern slavery. We unknowingly have made our hands and legs paralyzed and have become dependent on others. And criminals are taking this very opportunity. To save oneself from this there is no alternative to self-reliance.
Teach your child from childhood—one must wash one’s own water glass, one must make one’s own bed. Instead of raising him as a ‘King-Emperor’, raise him as a self-reliant human. The nation that needs others’ help to tie its own shoe laces, how will that nation provide its own security?
Remember, when you do your own work yourself, then your privacy will be maintained, the coming and going of outsiders will decrease and your family will remain safest. So, giving up the habit of keeping humans like slavery, start the practice of becoming self-reliant from today. And personal caution is not enough. We have to strengthen our society’s foundation too. So that poverty never becomes the cause of injustice or discrimination towards anyone. That every human’s minimum human rights remain protected, that must be ensured by the united effort of us all.
Thank you everyone.
Stay healthy, stay well.
And most importantly, stay safe.
