শুভেচ্ছা সবাইকে।
২০০৩ সালের মার্চে অ্যান্ড্রু কার্লসিন নামের ৪৪ বছরের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল এফবিআই। পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হচ্ছিলো, এই লোক অবিশ্বাস্য রকমের ভাগ্যবান। শেয়ার মার্কেটের ইতিহাসে তার মতো এত অর্থ আর কেউ আয় করেনি। অ্যান্ড্রু দুই সপ্তাহ পরপর ৮০০ ডলার ইনভেস্ট করতেন, পরে তা হয়ে যেত ৩৫০ মিলিয়ন ডলার। এফবিআইয়ের সন্দেহ হয়, তারা ধারণা করে, অ্যান্ড্রু কোনো স্ক্যামের সাথে জড়িত। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে অ্যান্ড্রু নিজেকে টাইম ট্রাভেলার বলে দাবি করেন, ২৫০ বছর আগে ভবিষ্যৎ থেকে পেছনে ফিরে এসেছেন তিনি। অর্থাৎ অ্যান্ড্রু ২২৫৩ সাল থেকে ট্রাভেল করে ২০০৩ সালে এসেছেন। যার কারণে বর্তমান স্টক মার্কেটে কোন শেয়ারের দাম বাড়বে আর কোন শেয়ারের দাম কমবে তিনি তা জানেন। আর সেটা বুঝেই ইনভেস্ট করতেন। এফবিআই তার এই আজগুবি কথা শুনে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। এবং যথারীতি তার এই দাবি মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টায় লেগে পড়ে।
তদন্ত করতে গিয়ে এফবিআই জানতে পারে, ২০০২ সালের আগে অ্যান্ড্রু কার্লসিন নিয়ে মার্কিন ডাটাবেজে কোনো রেকর্ডই নেই। তা না হয় মানা গেল, তবে চোখ কপালে ওঠার মতো তথ্য হলো, ২০০৩ সালের ৩ এপ্রিল কার্লসিনের জামিন শুনানির দিন হঠাৎই তিনি গায়েব হয়ে যান। এরপর তাকে আর কোনোদিনই পাওয়া যায়নি।
দর্শক আপনাদের মনেও হয়তো প্রশ্ন জাগছে, তিনি কি আসলেই টাইম ট্রাভেলার ছিলেন? টাইম ট্রাভেল করা কি আদৌ সম্ভব; নাকি এটা স্রেফ গল্প, উপন্যাস, সিনেমার কোনো ফিকশন?
বৈজ্ঞানিক নানা ব্যাখ্যা দিয়ে এসব প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করি চলুন।
১৮৯৫ সালে হার্বাট জর্জ ওয়েলস নামের একজন লেখক একটি উপন্যাস লিখেছিলেন, যার নাম ছিল দ্য টাইম মেশিন। বইটি প্রকাশের পর থেকেই মানুষের মাঝে টাইম মেশিন- টার্মটি জনপ্রিয় হতে থাকে। বলা হচ্ছিল, এই মেশিন মানুষকে সময়ের আগে কিংবা পেছনে নিয়ে যেতে পারবে। আসলে দ্য টাইম মেশিন ছিল সায়েন্স ফিকশন বই। কিন্তু এই বই থেকে প্রভাবিত হয়ে কিছু দার্শনিক ও পদার্থবিদ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। এরপর টাইম ট্রাভেল নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। তৈরি হয়েছে অসংখ্য মুভি।
নানাভাবে টাইম ট্রাভেল করার উপায়ও এসব মুভিতে দেখানো হয়েছে। সায়েন্স ফিকশনাল মুভি দিয়ে বিষয়টা বোঝালে সহজ মনে হবে। প্রথমেই আসি ওয়ান ওয়ে ট্রাভেল ইন ফিউচারের বিষয়ে। এক্ষেত্রে ট্রাভেল করে ভবিষ্যতে যাওয়া যায় কিন্তু আর ফেরা যায় না। এটার উদাহরণ হতে পারে ইন্টারস্টেলার মুভি। এই মুভিতে দেখানো হয়, এক ব্যক্তি টাইম ট্রাভেল করেছে এবং সে ফিরে আসার পর দেখে তার পরিবারের সবাই বুড়ো হয়ে গেছে এমনকি অনেকে মারাও গেছে। পরের উপায় হলো ইন্সট্যান্ট টাইম জাম্পিং। এই উপায়ে টাইম ট্রাভেল আমরা দেখেছি ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’ মুভিতে। তৃতীয় উপায় হলো টাইম ট্রাভেলার স্থির হয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে আর তার আশেপাশে সময় ঘুরতে থাকে। এটা দেখানো হয়েছে ‘হ্যারি পটার: প্রিজনার্স অব আজকাবান’ সিনেমায়।
বিজ্ঞানীরাও টাইম ট্রাভেল নিয়ে কম চিন্তা করেননি। প্রথমেই আসি বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের কথায়। তিনি বলেছিলেন, সময় ও জায়গা একই সঙ্গে চলে; যার নাম তিনি দিয়েছিলেন স্পেসটাইম। আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব অনুযায়ী, যদি কোনো কিছু আলোর গতির কাছাকাছি চলে, তখন তার জন্য সময় ধীরে ধীরে চলতে থাকে। এভাবে ভবিষ্যতে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে বৈকি। উদাহরণ দিলেই বুঝবেন। ধরুন, আপনি যদি আলোর গতিতে কোনো মহাকাশযানে ভ্রমণ করেন; মহাকাশে সেটা কয়েক মাস হলেও পৃথিবীতে ততদিনে দেখা যায় কয়েক বছর পেরিয়ে যাবে। অর্থাৎ, পৃথিবীর মানুষ থেকে আপনি ভবিষ্যতে চলে যাবেন। বিজ্ঞানীরা এটিকে ‘টাইম ডিলিউশন’ বা সময়ের প্রসারণ বলেন। তবে, এটি ভবিষ্যতে যাওয়ার জন্য প্রস্তাবিত একটি উপায় মাত্র।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আরেকটি তত্ত্ব হলো সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ, যেখানে বলা হয়েছে মহাকর্ষ শক্তিশালী হলে সময় ধীরে চলে। যেমন, ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের কাছাকাছি গেলে- সময় অনেক ধীরে চলে। তাই যদি কোনোভাবে ব্ল্যাক হোলের কাছাকাছি পৌঁছানো যায়, তাহলে আপনি ভবিষ্যতে চলে যেতে পারেন। তবে সমস্যা হলো, ব্ল্যাক হোল থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব।
স্টিফেন হকিংয়ের মতে, এই ধারণাকে সত্যি মেনে নিলে টাইম ট্রাভেল সম্ভব নয়। এ নিয়ে তার একটা ধারণা আছে। যার নাম ‘ক্রোনোলজি প্রোটেকশন কনজেকশ্চার’ বা কালানুক্রমিক সুরক্ষা অনুমান। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, প্রকৃতির কোনো মৌলিক নিয়ম আমাদের অতীতে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে, যেন টাইম প্যারাডক্সের মতো কোনো সমস্যা না হয়। টাইম প্যারাডক্স ব্যাপারটাও মজার। ধরুন, আপনি অতীতে গিয়ে আপনার দাদাকে হত্যা করলেন। তাহলে আপনার জন্মই হবে না, আর জন্ম না হলে আপনি অতীতে গেলেন কীভাবে? একেই বলা হয় গ্র্যান্ডফাদার প্যারাডক্স।
আরেকটি হলো বুটস্ট্র্যাপ প্যারাডক্স। ধরুন, আপনি ভবিষ্যতে গিয়ে কোনো বই পড়ে সেটার লেখককে অতীতে গিয়ে বইটির বিষয়বস্তু বললেন। তাহলে প্রশ্ন আসে, বইটা প্রথমে কে লিখল? এই প্যারাডক্সগুলো টাইম ট্রাভেলের তত্ত্বগুলো নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে। এগুলোই টাইম ট্রাভেলের সবচেয়ে বড় সমস্যা।
টাইম ট্রাভেলের আরেকটি জনপ্রিয় ধারণা হলো ওয়ার্মহোল। এটা এমন একটি পথ, যা স্পেসটাইমের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সরাসরি নিয়ে যেতে পারে, এমনকি ভিন্ন সময়েও। তত্ত্বে এটা সম্ভব, কিন্তু বাস্তবে এমন একটি স্থিতিশীল ওয়ার্মহোল তৈরি করা এখনো বিজ্ঞানীদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
চলুন আধুনিক কোয়ান্টাম সায়েন্স বা কণাবিজ্ঞান নিয়ে একটু কথা বলা যাক। টাইম ট্রাভেল নিয়ে আধুনিক বিজ্ঞান কোয়ান্টাম মেকানিক্সেও নতুন কিছু বিষয় উঠে আসছে। কোয়ান্টাম তত্ত্ব বলে, আমাদের এই পৃথিবী বা সময়ের মতো আরও অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন সময় বা সমান্তরাল টাইমলাইন এই মহাবিশ্বে থাকতে পারে। অর্থাৎ, একই সময়ে ভিন্ন জগত বা ভিন্ন ভবিষ্যৎ তৈরি হতে পারে। একেকটা টাইমলাইনে একেক ঘটনা ঘটতে পারে, যা আমাদের পৃথিবীবাসীর বর্তমান সময় থেকে একেবারেই আলাদা। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, যদি কোনোভাবে টাইম ট্রাভেল করা যায়, তবে হয়তো আমরা এই ভিন্ন টাইমলাইন বা সময়ের মধ্যে ভ্রমণ করতে পারি। তবে, এটা এখনো গবেষণার পর্যায়ে আছে এবং নিশ্চিতভাবে কেউ বলতেও পারে না যে, এটা সত্যিই সম্ভব কি না।
আসলে টাইম ট্রাভেলের ধারণা কেবল তত্ত্বে সীমাবদ্ধ না। বিজ্ঞানীরা ওয়ার্মহোল কিংবা কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে কাজ করছেন। ওয়ার্মহোল যদি কখনো তৈরি করা যায়, তাহলে হয়তো আমরা স্পেসটাইমে সরাসরি সময় পেরিয়ে যেতে পারব। ওয়ার্মহোল মূলত একটা কাল্পনিক টানেলের মতো, যা মহাকাশে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় কোনো কিছুকে খুব দ্রুত নিয়ে যেতে পারে, এমনকি সময়ের ভেতরেও ভ্রমণ করতে পারে। কিন্তু এই কাজ এখনো অনেক দূরে। তবে কিছু গবেষক মনে করেন, কোয়ান্টাম স্তরে টাইম ট্রাভেল সম্ভব হতে পারে। কোয়ান্টাম কণা বলতে আমরা অনেক ছোট ছোট কণা বা উপাদানকে বুঝি, যা খালি চোখে দেখা যায় না। এগুলো এত ছোট যে, এদের আচরণ খুব অদ্ভুত। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই ছোট কণাগুলো একই সময় একাধিক জায়গায় থাকতে পারে! এটা অনেকটা জাদুর মতো শোনালেও, বিজ্ঞানীরা এই অদ্ভুত ঘটনাকে কোয়ান্টাম মেকানিক্স নামেও ব্যাখ্যা করেন।
ধরুন, টাইম ট্রাভেল সত্যিই সম্ভব হলো। তাহলে কী হবে? কেউ যদি অতীতে গিয়ে ইতিহাস পরিবর্তন করে, ভবিষ্যতে তার প্রভাব কী হবে? ইতিহাস বদলে গেলে বর্তমানও তো বদলে যাবে। এটা মানবজাতির জন্য ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই টাইম ট্রাভেলের সামাজিক ও নৈতিক সমস্যা নিয়ে অনেক বিস্তর আলোচনা রয়েছে।
বর্তমান বিজ্ঞান অনুযায়ী, টাইম ট্রাভেল এখনো অসম্ভব একটি ব্যাপার। কিন্তু ভবিষ্যতে হয়তো একদিন আমরা এমন প্রযুক্তি তৈরি করতে পারব, যা সময়ের ভেতরে ভ্রমণ করা সম্ভব করে তুলবে। তবে যতদিন না আমাদের সেসব রহস্য উন্মোচন করতে পারি, ততদিন টাইম ট্রাভেল হয়ে থাকুক আমাদের কল্পনাশক্তির এক আকর্ষণীয় বিষয়। যা বিজ্ঞান ও কল্পবিজ্ঞানের মিশেলে আমাদের মনকে আনন্দময় গোলকধাঁধাঁয় আটকে রাখবে।
ধন্যবাদ সবাইকে
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
Time travel: It is truly possible!
Greetings to everyone!
In March 2003, the FBI arrested a 44-year-old man named Andrew Carlssin. News reports claimed this man was unbelievably lucky. No one in the history of the stock market had made as much money as he did. Andrew invested $800 every two weeks, and it turned into $350 million. The FBI became suspicious, suspecting Andrew of being involved in a scam. During interrogation, Andrew claimed to be a time traveler, saying he had come from the future 250 years back. This, he explained, allowed him to know which stocks would rise and which would fall, enabling him to invest wisely.
The FBI found his claims absurd but began investigating to prove him wrong. Interestingly, their investigation revealed no records of Andrew Carlssin in the U.S. database before 2002. While this surprised them, something even more shocking happened. On April 3, 2003, the day of his bail hearing, Andrew vanished without a trace and never appeared again.
Viewers, perhaps you are wondering—was he really a time traveler? Is time travel even possible, or is it just a concept from stories, novels, and movies?
Let’s explore these questions with some scientific explanations.
In 1895, a writer named Herbert George Wells wrote a novel called The Time Machine. After its publication, the term “time machine” became popular among people. It was said that this machine could take people forward or backward in time. In reality, The Time Machine was a science fiction book. But inspired by it, some philosophers and physicists began to think about the idea. Since then, there has been a lot of research on time travel, and numerous movies have been made.
Various methods of time travel have been depicted in these movies. Let’s simplify the concept using science fiction movies. First, let’s talk about one-way travel to the future. In this case, one can travel to the future but cannot return. An example of this could be the movie Interstellar. In this film, a person time-travels and, upon returning, finds that everyone in his family has aged, and some have even passed away. The second method is instant time jumping. We’ve seen this type of time travel in the movie Back to the Future. The third method is where the time traveler remains stationary while time moves around them. This has been shown in Harry Potter: The Prisoner of Azkaban.
Scientists, too, have thought extensively about time travel. Let’s start with the words of scientist Albert Einstein. He said that time and space move together, which he called spacetime. According to Einstein’s theory of special relativity, if something moves close to the speed of light, time slows down for it. This creates the possibility of traveling to the future. Here’s an example: Suppose you travel in a spacecraft at the speed of light. While it may seem like a few months in space, several years might pass on Earth. This means you would move into the future compared to the people on Earth. Scientists call this phenomenon “time dilation.” However, this is merely a proposed way to travel to the future.
Einstein’s theory of general relativity suggests that if gravity is strong, time moves slower. For instance, near a black hole, time moves much more slowly. If one could somehow approach a black hole, they could travel to the future. But the problem is, that escaping a black hole is nearly impossible.
According to Stephen Hawking, time travel may not be possible if we accept certain assumptions. He proposed the “chronology protection conjecture,” which suggests that some fundamental laws of nature might prevent us from traveling to the past to avoid problems like time paradoxes. Time paradoxes are fascinating. For instance, if you travel to the past and kill your grandfather, you wouldn’t be born, so how could you have traveled to the past in the first place? This is known as the grandfather paradox.
Another is the bootstrap paradox. Suppose you go to the future, read a book, and then tell the author about its content in the past. The question arises—who wrote the book first? These paradoxes create doubts about the theories of time travel. These are the biggest challenges of time travel.
Another popular concept of time travel is the wormhole. A wormhole is a theoretical pathway that could directly connect two points in spacetime, even to different times. Theoretically, it’s possible, but scientists haven’t yet managed to create a stable wormhole in reality.
Let’s talk a bit about modern quantum science. Modern science, particularly quantum mechanics, has introduced new ideas about time travel. Quantum theory suggests that there could be many parallel timelines or alternate versions of time, existing alongside our current one. In these alternate timelines, different events could occur, completely separate from the reality we experience. Scientists believe that if time travel were possible, we might travel between these alternate timelines. However, this remains under research, and no one can definitively say whether it’s truly possible.
The concept of time travel is not just confined to theory. Scientists are working on wormholes and quantum mechanics. If a wormhole could ever be created, we might be able to cross spacetime directly. A wormhole is essentially a hypothetical tunnel that could rapidly transport something from one place in the universe to another, potentially even across time. But this is still a long way off. However, some researchers believe that time travel might be possible on a quantum level. Quantum particles—tiny components that are invisible to the naked eye—behave in strange ways. Scientists have observed that these particles can exist in multiple places at the same time! While it sounds magical, scientists explain this phenomenon using quantum mechanics.
Imagine if time travel became a reality. What would happen? If someone went to the past and changed history, what effect would that have on the future? Changing history could also change the present, which could have catastrophic effects on humanity. Therefore, there is significant discussion about the social and ethical implications of time travel.
According to current science, time travel remains an impossible phenomenon. But in the future, we may develop technology that makes traveling through time a reality. Until we uncover those mysteries, let time travel remain an intriguing aspect of our imagination—a blend of science and science fiction that keeps our minds joyfully wandering in a fascinating maze.
Thank you, everyone.
Stay healthy and take care.